সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- অনেক প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা গবেষণা স্থগিত রাখতে নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং ল্যাবের প্রাণী হত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে
- হোয়াইট হাউস উচ্চশিক্ষার বিরুদ্ধে এক নতুন অভিযান শুরু করেছে, যেখানে তারা প্রগতিশীল মতাদর্শের প্রসার রোধ করতে চাইছে
- ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী এক ফিলিস্তিনি ছাত্রকে আটক করে বহিষ্কার করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর শাস্তির হাত বাড়াচ্ছে
রিপাবলিকান নেতৃত্ব দীর্ঘদিন ধরে মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি “ওয়োক” সংস্কৃতির উৎপত্তিস্থল এবং এগুলোতে উদ্ভব হওয়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিরোধের জন্য তারা এখন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। ২০২১ সালে জেডি ভ্যান্স ঘোষণা করেছিলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই শত্রু,” আর এই সপ্তাহে হোয়াইট হাউসও এদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে শুরু করে।

শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের কর্মকান্ড
- হোয়াইট হাউস উচ্চশিক্ষার বিরুদ্ধে এক নতুন অভিযান শুরু করেছে, যেখানে তারা প্রগতিশীল মতাদর্শের প্রসার রোধ করতে চাইছে।
- শিক্ষা মন্ত্রক ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্ক করে দিয়েছে যে, তারা যদি এই প্রতিষ্ঠানগুলিতে বিদ্যমান অন্তঃসত্ত্বা বিরোধী কার্যকলাপ বজায় রাখে, তাহলে করদাতা সহায়তা হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।
- সম্প্রতি, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছে—বিদ্রোহী প্রতিবাদের সময় সেখানে অন্তঃসত্ত্বা বৈষম্যের অভিযোগে ৪০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
- পাশাপাশি, একজন ফিলিস্তিনি গ্রিন কার্ডধারী ছাত্রকে, যিনি প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন, বহিষ্কৃত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
- এছাড়াও, ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অনলাইনে প্রো-হামাস বিষয়বস্তু প্রদর্শনের জন্য ছাত্রদের উপর নজরদারি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার অবস্থা
- জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণা অনুদানের কাটছাঁটের ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা গবেষণা স্থগিত রাখতে, নির্মাণ কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং ল্যাবের প্রাণী হত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে।
- এই সব পদক্ষেপগুলো উচ্চশিক্ষার প্রতি দীর্ঘদিন ধরে রিপাবলিকানদের নেতিবাচক মনোভাবের প্রতিফলন।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
- হাউস জুডিসিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান জিম জর্ডান (অহায়ো) বলেন, “প্রেসিডেন্ট যে গতিতে ও দৃঢ়ভাবে তার ঘোষণামাফিক কাজ করছেন, তা আমাদের সকলের জন্য একটি শিক্ষা।”
- রাজনৈতিক মঞ্চে এই পদক্ষেপগুলোকে প্রগতিশীল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উগ্রতার উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করার কৌশল হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
- ২০২৪ সালের নির্বাচনে কলেজ ডিগ্রি ছাড়াও ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বেড়ে গেছে; যা এ বক্তব্যকে আরও শক্তিশালী করছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিবাদের বিবরণ
- গত বছরের এপ্রিল মাসে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা “গাজা সলিডারিটি এনক্যাম্পমেন্ট” নামে একটি টেন্ট শহরায় বসে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।
- এ সময়, স্পীকার মাইক জনসন ছাত্রদের “আপনার পিতামাতার অর্থ অপচয় বন্ধ করুন” বলে সতর্ক করেছিলেন এবং প্রয়োজনে ন্যাশনাল গার্ডকে সহায়তার জন্য বলেছিলেন।
- রাতের অন্ধকারে, কয়েক ডজন মুখোশধারী প্রতিবাদী একটি লক করা ভবনে প্রবেশ করে, সেটিকে “হিন্দ’স হল” নামে ঘোষণা করে ও ভবনের বাহিরে প্রতিবাদ চালিয়ে যায়।
- এই পরিস্থিতিতে, সাবেক কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট মাইনশ শাফিক, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের সহযোগিতায় এনপিডিকে ডেকে আনেন।
- পুলিশ বাহিনী প্রবেশ করে প্রতিবাদীদের নিয়ন্ত্রণে আনে, যার ফলে শাফিক আগস্ট মাসে পদত্যাগ করেন।

ফেডারেল ব্যবস্থা ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
- ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী এক ফিলিস্তিনি ছাত্রকে আটক করে বহিষ্কার করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর শাস্তির হাত বাড়াচ্ছে।
- হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিভিট জানান, বিদেশনীতি বা জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ করা ব্যক্তিদের গ্রিন কার্ড বা ভিসা বাতিল করার পূর্ণ অধিকার রয়েছে।
- একই সাথে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহায়তায় অন্যান্য শিক্ষার্থীদের অনলাইনে প্রো-হামাস কার্যকলাপে যুক্ত থাকার তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
- কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়ে জবাব দেয় যে, আইনানুগ কার্যক্রমে বিচারিক ওয়ারেন্ট প্রয়োজন।
উপসংহার
এই সব পদক্ষেপই দীর্ঘদিন ধরে রিপাবলিকানদের উচ্চশিক্ষার বিরুদ্ধে থাকা মনোভাবের প্রতিফলন। ২০২১ সালে জেডি ভ্যান্স যখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, তখন থেকেই এই প্রতিরোধের মোড়কে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। ট্রাম্পের এই নীতি অব্যাহত রেখে, রিপাবলিকানরা উচ্চশিক্ষাকে নতুন এক রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে তুলছেন।
Leave a Reply