০৪:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

নিরাপত্তাহীনতায় ঢাকা- চট্টগ্রাম রোড়: ক্ষতিগ্রস্থ শুধু নাগরিকরা নন, ব্যবসা-বানিজ্যও

  • Sarakhon Report
  • ০৪:১০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • 26

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • একজন শিল্পগোষ্ঠীর ডিরেক্টর তার জাপানি গ্রাহককে নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন
  • প্রবাসীদের বহনকারী মাইক্রোবাস এবং ছোট সেডান গাড়িগুলি ডাকাতদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু
  • পুলিশ ও সেনাবাহিনী মহাসড়কে অতিরিক্ত ২৫০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করেছে

তিনি একটি বড় শিল্পগোষ্টির ডিরেক্টর। জাপানি এক কাস্টমারকে নিয়ে চট্টগ্রাম রওনা হয়েছিলেন ভোর রাতে। উদ্দেশ্য সন্ধ্যার আগে ঢাকায় ফিরে আসা। ঢাকা- চট্টগ্রাম রোডে ওঠার আগেই কয়েক তরুণ তাদের গাড়ি আটকায় মোটর সাইকেল দিয়ে। তারপরে তাদের কাছে থাকা যাবতীয় অর্থ নিয়ে নেয়। ঘটনায় জাপানি কাস্টমার খুব ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ভীত হয়ে পড়েন ওই ডিরেক্টরও। তারপরেও তিনি তার বড় ভাই চেয়ারম্যানকে ফোন করেন। চেয়ারম্যান তাদেরকে বিষয়টি চেপে গিয়ে কাস্টমারকে সাহস দিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে যেতে বলেন। চেয়ারম্যানের বক্তব্য হলো এ মুহূর্তে যেভাবে কাস্টমার কমেছে তাতে বিষয়টি জানাজানি হলে তার নিজের ও দেশের ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষতি হবে। ওই চেয়ারম্যানের মতে এ ধরনের ঘটনা হর হামেশাই ঘটছে ওই রাস্তায়। এমন ঘটনা ঘটছে প্রবাস থেকে যারা অর্থ নিয়ে ফিরেছে তাদের ক্ষেত্রেও।

প্রবাসীদের প্রতি লক্ষ্যমাত্রা:
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী ও অন্যান্য যাত্রীদের গাড়ি, বিশেষ করে মাইক্রোবাস বা ছোট সেডান গাড়িগুলিই লুটের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাপক রীতিমত ঘটমান অপরাধ

  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অব্যাহত ডাকাতি:
    রাতের অন্ধকারে কিংবা দিনের বেলায়, মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। বহু প্রবাসী, ব্যবসায়ী, গাড়িচালক, মোটরসাইকেল আরোহী ও স্থানীয় শ্রমিক এই অপরাধের শিকার হচ্ছেন।
  • অতিরিক্ত দুর্ব্যবহার:
    হাইওয়ে পাশে টোল প্লাজার হকার এবং হোটেল থেকে তথ্য প্রদানকারীদের মাধ্যমে ডাকাতদের সহায়তা করা হচ্ছে। একই সাথে, দিনের বেলায় ‘অজ্ঞান পার্টি’ ও ‘মলম পার্টি’ নামেও প্রতারনার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, যেখানে প্রতারকরা চেতনানাশক রাসায়নিক দিয়ে মানুষের মনে জ্ঞানহীনতা সৃষ্টি করে টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যায়।

স্থানীয় ও আঞ্চলিক অপরাধের উদাহরণ

  • বহু অঞ্চলে ঘটমান হামলা:
    মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২টি ডাকাতির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।

    • এক ঘটনায় মালয়েশিয়া প্রবাসী বেলাল হোসেনের গাড়িতে হামলা করে সবকিছু লুট করে নেওয়া হয়।
    • অন্য এক ঘটনায়, কুমিল্লা সদর থেকে একটি পিকআপ ভ্যানের আক্রমণে একজন ব্যক্তির মোটরসাইকেল নেওয়া হয় এবং গুরুতর শারীরিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
  • প্রস্তুতির সময় গ্রুপ গঠন:
    দেবিদ্বারের প্রজাপতি গ্রাম থেকে আটক হওয়া এক দল ডাকাতের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলার অভিযোগ রয়েছে।

৫. প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদারী

  • পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ:
    ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে মহাসড়কে অতিরিক্ত ২৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

    • বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরাপত্তা প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
    • হাইওয়ে পুলিশও অব্যাহত অপরাধ প্রতিরোধে জোরদার পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

মন্তব্য

মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, যার ফলে মানুষের জীবন ও সম্পদ দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদারী ও কার্যকর নজরদারি না হলে এই অপরাধ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হচ্ছে।

হোলি আর্টিজান হামলা: বাংলাদেশের হৃদয়ে রক্তাক্ত স্মৃতি ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

নিরাপত্তাহীনতায় ঢাকা- চট্টগ্রাম রোড়: ক্ষতিগ্রস্থ শুধু নাগরিকরা নন, ব্যবসা-বানিজ্যও

০৪:১০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ

  • একজন শিল্পগোষ্ঠীর ডিরেক্টর তার জাপানি গ্রাহককে নিয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন
  • প্রবাসীদের বহনকারী মাইক্রোবাস এবং ছোট সেডান গাড়িগুলি ডাকাতদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু
  • পুলিশ ও সেনাবাহিনী মহাসড়কে অতিরিক্ত ২৫০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করেছে

তিনি একটি বড় শিল্পগোষ্টির ডিরেক্টর। জাপানি এক কাস্টমারকে নিয়ে চট্টগ্রাম রওনা হয়েছিলেন ভোর রাতে। উদ্দেশ্য সন্ধ্যার আগে ঢাকায় ফিরে আসা। ঢাকা- চট্টগ্রাম রোডে ওঠার আগেই কয়েক তরুণ তাদের গাড়ি আটকায় মোটর সাইকেল দিয়ে। তারপরে তাদের কাছে থাকা যাবতীয় অর্থ নিয়ে নেয়। ঘটনায় জাপানি কাস্টমার খুব ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। ভীত হয়ে পড়েন ওই ডিরেক্টরও। তারপরেও তিনি তার বড় ভাই চেয়ারম্যানকে ফোন করেন। চেয়ারম্যান তাদেরকে বিষয়টি চেপে গিয়ে কাস্টমারকে সাহস দিয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে যেতে বলেন। চেয়ারম্যানের বক্তব্য হলো এ মুহূর্তে যেভাবে কাস্টমার কমেছে তাতে বিষয়টি জানাজানি হলে তার নিজের ও দেশের ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষতি হবে। ওই চেয়ারম্যানের মতে এ ধরনের ঘটনা হর হামেশাই ঘটছে ওই রাস্তায়। এমন ঘটনা ঘটছে প্রবাস থেকে যারা অর্থ নিয়ে ফিরেছে তাদের ক্ষেত্রেও।

প্রবাসীদের প্রতি লক্ষ্যমাত্রা:
পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসী ও অন্যান্য যাত্রীদের গাড়ি, বিশেষ করে মাইক্রোবাস বা ছোট সেডান গাড়িগুলিই লুটের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যাপক রীতিমত ঘটমান অপরাধ

  • ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অব্যাহত ডাকাতি:
    রাতের অন্ধকারে কিংবা দিনের বেলায়, মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। বহু প্রবাসী, ব্যবসায়ী, গাড়িচালক, মোটরসাইকেল আরোহী ও স্থানীয় শ্রমিক এই অপরাধের শিকার হচ্ছেন।
  • অতিরিক্ত দুর্ব্যবহার:
    হাইওয়ে পাশে টোল প্লাজার হকার এবং হোটেল থেকে তথ্য প্রদানকারীদের মাধ্যমে ডাকাতদের সহায়তা করা হচ্ছে। একই সাথে, দিনের বেলায় ‘অজ্ঞান পার্টি’ ও ‘মলম পার্টি’ নামেও প্রতারনার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে, যেখানে প্রতারকরা চেতনানাশক রাসায়নিক দিয়ে মানুষের মনে জ্ঞানহীনতা সৃষ্টি করে টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে যায়।

স্থানীয় ও আঞ্চলিক অপরাধের উদাহরণ

  • বহু অঞ্চলে ঘটমান হামলা:
    মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, চৌদ্দগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ১০ থেকে ১২টি ডাকাতির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে।

    • এক ঘটনায় মালয়েশিয়া প্রবাসী বেলাল হোসেনের গাড়িতে হামলা করে সবকিছু লুট করে নেওয়া হয়।
    • অন্য এক ঘটনায়, কুমিল্লা সদর থেকে একটি পিকআপ ভ্যানের আক্রমণে একজন ব্যক্তির মোটরসাইকেল নেওয়া হয় এবং গুরুতর শারীরিক আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
  • প্রস্তুতির সময় গ্রুপ গঠন:
    দেবিদ্বারের প্রজাপতি গ্রাম থেকে আটক হওয়া এক দল ডাকাতের বিরুদ্ধে ৩৪টি মামলার অভিযোগ রয়েছে।

৫. প্রশাসনিক প্রতিক্রিয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদারী

  • পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ:
    ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে মহাসড়কে অতিরিক্ত ২৫০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

    • বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরাপত্তা প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
    • হাইওয়ে পুলিশও অব্যাহত অপরাধ প্রতিরোধে জোরদার পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

মন্তব্য

মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, যার ফলে মানুষের জীবন ও সম্পদ দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদারী ও কার্যকর নজরদারি না হলে এই অপরাধ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হচ্ছে।