সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ঢাবি ক্যাম্পাসে না হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অনেকে এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
-
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, জানাজার স্থান নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পরিবারই নিয়েছে, এবং তারা সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে। তবে পরিবার বলেছে, চাইলে ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় জানাজার আয়োজন সম্ভব ছিল।
-
শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একটি বড় অংশ মনে করেন, সাবেক উপাচার্যের জানাজা ক্যাম্পাসে না হওয়া অবিচার এবং এটি ভবিষ্যতের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দাফন ও জানাজার স্থান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ শুক্রবার (১৫ মার্চ) ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোডের ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। তবে ঢাবি ক্যাম্পাসে তাঁর জানাজা না হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জানাজার স্থান নির্ধারণের সিদ্ধান্ত পরিবারই নিয়েছে। পরিবারের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করে প্রশাসন তাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রশাসন এক দিনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার বিষয়েও আলোচনা করছে।
পরিবারের বক্তব্যa
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিকের ছোট ভাই সাইফুল্লাহ সিদ্দিক বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জানিয়েছেন, জানাজা ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। তবে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চায়, তাহলে ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় জানাজার আয়োজন সম্ভব ছিল।
সমালোচনা ও প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা সাবেক উপাচার্যের জানাজা ক্যাম্পাসে না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক বলেছেন, যদিও জানাজার আয়োজন পরিবারিকভাবে ধানমন্ডিতে করা হয়েছে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে নিজের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে জানাজার ব্যবস্থা করতে পারত।
একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে জানাজার আয়োজন থেকে সরে এসেছে। সাংবাদিকতা বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
জানাজার সময় বিতর্ক
প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় সেন্ট্রাল রোডের এক মসজিদের সামনে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। জানাজা শেষে উপস্থিত অনেকে তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেন ক্যাম্পাসে জানাজা হচ্ছে না। তবে তিনি কোনো মন্তব্য না করে স্থান ত্যাগ করেন।
শিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে ক্যাম্পাসই তাঁর ঠিকানা। সেখানে প্রবেশের সুযোগ না দেওয়া তাঁর প্রতি অবিচার।’’
সাবেক অধ্যাপক ফাহমিদুল হক তাঁর স্ট্যাটাসে বলেন, ‘‘একজন অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্যের জানাজা ক্যাম্পাসে না হওয়া দুঃখজনক ও ভবিষ্যতের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত।’’
শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
ধানমন্ডি ঈদগাহ ও আজিমপুর কবরস্থানে ঢাবির বর্তমান উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘‘সাবেক উপাচার্য মনিরুজ্জামান মিঞার জানাজা ঢাবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু আপনি আরেফিন সিদ্দিকের জানাজার অনুমতি দেননি। আপনার জানাজাও আমরা ঢাবি ক্যাম্পাসে হতে দেব না।’’
শেষ কথা
সাবেক উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের জানাজা ঢাবি ক্যাম্পাসে না হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে, যা ভবিষ্যতে আলোচনার বিষয় হয়ে থাকবে।