সারাক্ষণ ডেস্ক
একজন অস্ট্রেলিয়ান ব্যক্তি, যিনি গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত ছিলেন, বায়ভ্যাকর (BiVACOR) সম্পূর্ণ কৃত্রিম হৃদয় নিয়ে ১০৫ দিন বেঁচে ছিলেন, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অবশেষে, সফলভাবে একজন দাতার হৃদয় প্রতিস্থাপনের পর, তিনি বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
গত বছরের নভেম্বর মাসে সিডনির সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালের চিকিৎসকরা ছয় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই কৃত্রিম হৃদয় প্রতিস্থাপন করেন। এটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সম্পূর্ণ কৃত্রিম হৃদয় প্রতিস্থাপন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান, যা বিশ্বে প্রথমবারের মতো এমন একটি ঘটনা যেখানে সম্পূর্ণ কৃত্রিম হৃদয় নিয়ে একজন রোগী হাসপাতালের বাইরে জীবনযাপন করেছেন।

কৃত্রিম হৃদয় প্রযুক্তিতে নতুন সম্ভাবনা
বায়ভ্যাকর সম্পূর্ণ কৃত্রিম হৃদয়টি অস্ট্রেলিয়ান বায়োইঞ্জিনিয়ার ড্যানিয়েল টিমসের আবিষ্কার। এটি একটি টাইটানিয়াম ব্লাড পাম্প, যা ম্যাগনেটিক লেভিটেশন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। এই প্রযুক্তি সাধারণত উচ্চগতির ট্রেন পরিচালনায় ব্যবহৃত হয়। এটি সম্পূর্ণ যান্ত্রিক পরিধান এড়িয়ে চলে, যা সাধারণ কৃত্রিম হৃদয়ের তুলনায় অধিক কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (FDA) অনুমোদিত একটি প্রাথমিক পরীক্ষামূলক গবেষণায় পাঁচজন রোগীর শরীরে এই কৃত্রিম হৃদয় প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এটি হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় থাকা বা প্রতিস্থাপনের যোগ্য নয় এমন রোগীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হতে পারে।

হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের বিকল্প কি আসছে?
হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আগামী দশকের মধ্যে কৃত্রিম হৃদয় প্রযুক্তি হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের একটি বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় সম্পন্ন এই প্রতিস্থাপন প্রকল্পটি মনাশ ইউনিভার্সিটির নেতৃত্বে পরিচালিত “আটিফিশিয়াল হার্ট ফ্রন্টিয়ার্স প্রোগ্রাম”-এর অংশ, যা ৫০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলারের অর্থায়নে কৃত্রিম হৃদয় প্রযুক্তির গবেষণা ও বাণিজ্যিকীকরণের জন্য কাজ করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ১.৮ কোটি মানুষ হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করে। এই নতুন কৃত্রিম হৃদয় প্রযুক্তি হাজারো রোগীর জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যারা প্রতিস্থাপনের জন্য উপযুক্ত হৃদযন্ত্রের জন্য অপেক্ষা করছেন।
Sarakhon Report 



















