সারাক্ষণ ডেস্ক
ব্রাজিলের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ANAC মঙ্গলবার আঞ্চলিক এয়ারলাইন ভয়পাসের কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। সাত মাস আগে সাও পাওলোর কাছে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৬২ জন নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই স্থগিতাদেশ ভয়পাসের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা। গত মাসেই কোম্পানিটি ঋণ পুনর্গঠনের জন্য আবেদন করেছিল, যা শেষ পর্যন্ত দেউলিয়া সুরক্ষার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
ভয়পাসের ফ্লাইট ২২৮৩, একটি ATR-72 উড়োজাহাজ, গত ৯ আগস্ট কাসকাভেল থেকে সাও পাওলোর উদ্দেশে যাত্রা করছিল, কিন্তু ভিনহেডো শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয়। প্রাথমিক তদন্তে প্লেনে বরফ জমার লক্ষণ পাওয়া গেলেও দুর্ঘটনার চূড়ান্ত কারণ নিশ্চিত করা যায়নি।
ANAC দুর্ঘটনার পর থেকেই ভয়পাসের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছিল এবং প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় “বিশ্বাসের লঙ্ঘন” ঘটেছে বলে উল্লেখ করে সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করে।
ভয়পাসের নিয়ম লঙ্ঘন ও নিরাপত্তা ত্রুটি
গত অক্টোবরে ANAC ভয়পাসকে তাদের কার্যক্রম সীমিত করা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উড়োজাহাজগুলোর স্থিতিকাল বাড়ানোর মতো বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু ফেব্রুয়ারির শেষ দিকের নতুন পরিদর্শনে দেখা যায় যে, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি আরও অবনতি ঘটেছে এবং তারা নিয়মিতভাবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় শর্ত লঙ্ঘন করছে।
ANAC জানায়, “ভয়পাস যথাযথ নিরাপত্তা মান বজায় রাখার সক্ষমতা প্রমাণ করতে না পারা পর্যন্ত এর কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”
ভয়পাসের প্রতিক্রিয়া
ভয়পাস নিশ্চিত করেছে যে তারা স্থগিতাদেশের নোটিশ পেয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা মান বজায় রাখার যোগ্যতা প্রমাণের চেষ্টা করবে। কোম্পানিটি দাবি করেছে যে, তাদের উড়োজাহাজ কার্যক্ষম ও কঠোর নিরাপত্তা মান বজায় রেখে পরিচালনার উপযুক্ত।
ভয়পাসের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
ভয়পাস বর্তমানে ব্রাজিলের চতুর্থ বৃহত্তম বিমান সংস্থা হলেও এর বাজার অংশীদারিত্ব ১% এরও কম। ANAC-এর তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানির ছয়টি উড়োজাহাজ ১৫টি গন্তব্যে পরিচালিত হতো এবং তাদের দুটি চার্টার চুক্তিও ছিল।
ব্রাজিলের বন্দর ও বিমানবন্দর মন্ত্রণালয় ANAC-এর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে এবং বলেছে যে, এটি ভয়পাসের অভ্যন্তরীণ পরিচালনা উন্নত করা এবং দেশের বিমান চলাচলের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।
এই স্থগিতাদেশ কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে, বিশেষ করে যখন এটি ঋণ পুনর্গঠনের মাধ্যমে দেউলিয়াত্বের আশঙ্কার মুখে রয়েছে। এখন কোম্পানিটি পুনরায় কার্যক্রম শুরু করতে চাইলে তাদের কঠোর নিয়ন্ত্রক মানদণ্ড মেনে চলার সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে