বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দেশে প্রথম এনজিএস-ভিত্তিক ক্যান্সার পরীক্ষা চালু করছে আইসিডিডিআর,বি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে পিছিয়ে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ভারতের সুইজারল্যান্ডখ্যাত পহালগামের টেরোরিস্ট হামলা, রক্তের বন্যা অ্যান্টার্কটিকায় ছিনলিং স্টেশনে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির সাফল্যগাথার নেপথ্যে রাজনৈতিক দল গঠনের মৌসুম চলছে:  নতুন ৬০ এর বেশি আবেদন ইসিতে পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের স্মৃতিকথা (পর্ব-১৭৫) অনলাইনে আত্মপ্রকাশ করল চাইনিজ কালচারপিডিয়া আজতেক সভ্যতার ইতিহাস (পর্ব-৩৫) রাষ্ট্রীয় কাজের বাইরে যে ভাবে সারাদিন দিল্লি কাটালেন ভ্যান্স তার পরিবার নিয়ে প্রাচীন ভারতে গণিতচর্চা (পর্ব-১৫৫)

মুর্শিদাবাদ-কাহিনী (পর্ব-২৭৫)

  • Update Time : রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫, ১১.০০ পিএম

শ্রী নিখিলনাথ রায়

যদি তিনি ইহাতে কৃতকার্য্য হইতে পারিতেন, তাহা হইলে তীর্থক্ষেত্রে প্রকৃত পুণ্যের সঞ্চয় করিয়া, চিরদিনই হিন্দুর নিকট আদরণীয় হইতেন, সন্দেহ নাই। কিন্তু তাঁহার প্রভু তাঁহারও অনুরোধ উপেক্ষা করিলেন। হেষ্টিংস যেরূপে হউক, চেৎ সিংহকে নির্যাতন করিতে আদেশ দিলেন। এই সময়ে রাজার পক্ষীয় লোকেরা সমস্ত নগরে ভীষণ কোলাহল উপস্থিত করিল। হেষ্টিংস আপনার জীবনকে নিরাপদ বিবেচনা করি-লেন না। যদি তাহারা তাঁহার আশ্রয়স্থান আক্রমণ করিত, তাহা হইলে তাঁহার ও তাঁহার সঙ্গী আরও ত্রিশ জন ইংরেজের রক্তে তরবারি রঞ্জিত করিতে পারিত। হেষ্টিংস নিজ মুখে ইহা স্বীকার করিয়া গিয়াছেন। তাহারা নায়কবিহীন হইয়া, ইতস্ততঃ কোলাহল করিয়া বেড়াইতে লাগিল। হেষ্টিংস কাশীতে অবস্থান করা নিরাপদ নহে মনে করিয়া, রজনীযোগে চুনার দুর্গে পলায়ন করিলেন। তাঁহার পলায়ন উপলক্ষ করিয়া চেৎ সিংহের লোকেরা এইরূপে বিদ্রূপ করিয়াছিল:-
“হাতীপর হাওদা ঘোড়েপর জীন।
জল্দী যাও জল্দী যাও ওয়ারেন্ হষ্টিন্।”
কান্ত বাবু প্রভৃতিও হেষ্টিংসের পশ্চাৎ পশ্চাৎ পলায়ন করিতে বাধ্য হন। এই সময়ে হেষ্টিংস চতুদ্দিকে সংবাদ প্রেরণ করিলে, দলে দলে ইংরেজ-সেনা আসিয়া উপস্থিত হয়। তাহারা রামনগর প্রভৃতি স্থান আক্রমণের পর চেৎসিংহের পশ্চাৎ পশ্চাৎ শোণ নদ হইতে কয়েক ক্রোশ দূরে বিজয়গড় নামক দুর্গে উপস্থিত হইল। এই দুর্গে চেৎসিংহের মাতা, স্ত্রী ও অন্যান্য পরিবারবর্গ বাস করিতেছিলেন। চেৎসিংহ তথায় উপস্থিত হইয়া কিছুকাল অতিবাহিত করেন।
কিন্তু মেজর পপহামের অধীন একদল ইংরেজসৈন্য বিজয়গড় আক্রমণ করিতে গমন করায়, চেৎ সিংহ আপনার যাবতীয় ধনসম্পত্তিসহ বিজয়গড় হইতে বুন্দেলখণ্ডে পলায়ন করেন। তাঁহার মাতা, স্ত্রী ও পরিবার সকলে অরক্ষিতভাবে উক্ত দুর্গে অবস্থান করিতে থাকেন। চেৎ সিংহ এইরূপ কাপুরুষতা অবলম্বন করিয়া, কিজন্য আপনার পরিবারবর্গকে শত্রুর হস্তে সমর্পণ করিয়াছিলেন, বুঝা যায় না; অথবা তিনি মনে করিয়াছিলেন যে, সুসভ্য ইংরেজ কখনও স্ত্রীলোকদিগকে আক্রমণ করিবে না। মেজর পপহাম বিজয়গড়ে উপস্থিত হইয়া অবগত হইলেন যে চেৎসিংহ পলায়ন করিয়াছেন, কেবল তাঁহার পরিবারবর্গ অবস্থিতি করিতেছেন।
মেজর পপহাম এই কথা হেষ্টিংসকে লিখিয়া পাঠাইলে, তিনি আদেশ দিলেন যে, অবিলম্বে স্ত্রীলোক-দিগকে দুর্গ পরিত্যাগ করিতে হইবে; যদি তাহারা স্বীকৃত না হয়, তাহা হইলে তাহাদিগকে আক্রমণ করা যাইবে। পপহাম পুনর্ব্বার লিখিয়া পাঠাইলেন যে, তাহারা গুপ্তভাবে দ্রব্যাদি লইয়া গেলে তৎসমুদায়ের উদ্ধারের কোনই উপায় নাই।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024