সারাক্ষণ রিপোর্ট
ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ধাক্কায় বেকায়দায় আসিয়ান
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর উপর গড়ে ৩৩ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর, পুরো অঞ্চলটি এক গভীর অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। উৎপাদন খাতে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি অর্জনকারী এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত এখন নড়বড়ে হয়ে গেছে। কুয়ালালামপুরে এক বৈঠকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, “বিশ্বের বর্তমান অস্থির অবস্থায় আমাদের নিজেদের ওপর নির্ভর করতে হবে।”
পরিসংখ্যানে আসল চিত্র: আসিয়ান বাণিজ্যে দুর্বলতা
দেশের ভিত্তিতে ক্ষতির আশঙ্কা
কাঠামোগত সমস্যাই মূল বাধা
ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বিপর্যয়
ইন্দোনেশিয়ার লাম্পুং প্রদেশের সিগার জয়া আবাদি কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বছর ধরে ক্র্যাব রপ্তানি করছিল। কিন্তু নতুন শুল্কের ফলে প্রতি কেজির দাম $৪৫ থেকে কমে $১৮-২০ হয়ে গেছে। কোম্পানির কমিশনার যোগা সদানা বলেন, “এটা আমাদের জন্য বিশাল সমস্যা।”
এশিয়ান বাজার খুব ছোট, আর ইউরোপের বাজারে প্রবেশের জন্য মান নিয়ন্ত্রণের কঠিন শর্ত রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের চিত্র
নতুন কৌশলের প্রয়োগ ও বাস্তবতা
সীমিত অভ্যন্তরীণ বাজার ও ক্রয়ক্ষমতা
শুল্কবহির্ভূত বাধার সংখ্যা বেড়েছে
এতে করে কোম্পানিগুলোর জন্য সময় ও খরচ উভয়ই বেড়েছে।
চীনের ওপর বাড়ছে নির্ভরতা
ট্রাম্প চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায়, চীনা পণ্য এখন আসিয়ান অঞ্চলে কম দামে প্রবেশ করছে। এতে স্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো হুমকিতে পড়েছে।
বিকল্প পথে সম্ভাবনা
ভবিষ্যৎ কৌশল ও আঞ্চলিক বাস্তবতা
বিশেষজ্ঞদের মতে, আসিয়ান কখনোই ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো হতে পারবে না। এর ভিন্নতা-ই এর স্থিতিশীলতার ভিত্তি।
মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ী নেতা নাজির রাজাক বলেন, “আমাদের ইউরোপের মতো হতে হবে না, আমাদের নিজের বাস্তবতায় উপযুক্ত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”
উপসংহার
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি আসিয়ানের জন্য এক প্রকার সুযোগ হয়ে এসেছে—নিজেদের বাজার শক্তিশালী ও অভ্যন্তরীণ সংহতি বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলার।
চ্যালেঞ্জ কঠিন হলেও, দীর্ঘমেয়াদে এই পথই আসিয়ানের জন্য সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে।
Leave a Reply