০২:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

রোদের আলো কেন শরীরে লাগানো উচিত আপনার?

  • Sarakhon Report
  • ১০:২৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • 31

বছরের পর বছর ধরে আমরা শুনে আসছি যে সানস্ক্রিন ছাড়া তীব্র রোদে বের হওয়া বিপজ্জনক। কিন্তু সত্য হলো, আমাদের শরীরের জন্য রোদের আলোরও দরকার আছে।

সূর্যের আলো আপনার মন-মেজাজ ভালো করতে পারে, রক্তচাপ কমাতে পারে, আপনার হাড়-পেশী––এমনকি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে পারে।

সূর্যের শক্তি

কিছুটা সময় বাইরে বসে থাকা, ত্বকে রোদের উষ্ণতা অনুভব করা আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো কাজ করতে পারে।

মনে রাখার বিষয় হলো, সরাসরি সূর্যালোক ছাড়া আমাদের শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে না, আর ভিটামিন ডি আমাদের হাড়, পেশী ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

কাজেই, ভিটামিন ডি বাড়াতে হলে রোদে যেতেই হবে।

আর গ্রীষ্মের মাসগুলোয় যখন উজ্জ্বল রোদের আলো থাকে চারপাশে, তখন শরীর ভিটামিন ডি সংগ্রহ করে রাখে যা শীতকালে কাজে আসে।

ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম থাকার সঙ্গে এটি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যুক্ত। তাই সুস্থ থাকার জন্য আমাদের রোদে যেতেই হবে।

তবে ভিটামিন ডি পাওয়াই সূর্যের একমাত্র উপকারিতা নয়।

মানুষের মন-মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে রোদের আলো

মন-মেজাজ ভালো করে

রোদ দেখলে ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয়। এর কারণ হলো রোদের সংস্পর্শে আমাদের মস্তিষ্ক সেরোটোনিন নামের হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন আমাদের মন-মেজাজ ভালো করে, মনকে শান্ত রাখতে ও মনোযোগ তৈরি করতেও সহায়তা করে।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মেঘলা বা আবছা আলোর দিনগুলোর তুলনায় রোদ্রোজ্জ্বল দিনে মানুষের রক্তে সেরোটোনিনের মাত্রা বেশি থাকে।

এতে আরও দাবি করা হয়েছে, কোন ঋতু চলছে বা ঘরের বাইরে তাপমাত্রা কেমন তারচেয়েও মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদনের হার বেশি সম্পর্কিত সরাসরি উজ্জ্বল সূর্যালোকের সময়কালের সাথে। অর্থাৎ দিনের কতটা সময় ঝকঝকে রোদ দেখা যাচ্ছে তার ওপর সেরোটোনিন উৎপন্ন হওয়ার নির্ভর করছে অনেকটাই।

আবার এর বাইরেও এমন কিছু গবেষণা রয়েছে যেগুলোয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে সরাসরি সূর্যের আলো আপনার ত্বকের কোষগুলোকে এন্ডোরফিন (যাকে বলা হয় প্রাকৃতিক ব্যাথা উপশমকারী) তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে, যা আপনাকে ভালো বোধ করায়।

রক্তচাপ কমায়

শরীরের রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে রোদের সরাসরি ভূমিকা আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় দেখিয়েছেন, ২০ মিনিটের মতো সময় হাতে রোদ লাগালে তা ত্বকে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করার জন্য যথেষ্ট, যার ফলে রক্ত নালীগুলো প্রসারিত হয় এবং রক্তচাপ নেমে আসে।

স্বাস্থ্যের ওপর সূর্যালোকের নানা রকম উপকারী প্রভাব গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে

শক্তি বাড়ায়

আপনার বয়স যতই হোক না কেন, আপনার হাড়ের জন্য ভিটামিন ডি খুবই দরকারি এক উপাদান। এটি হাড়কে শক্তিশালী করে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি নেওয়ার কারণে অ্যাথলেটদের পেশীর শক্তি বেড়েছে। পেশীর কোষ বৃদ্ধিতে উদ্দীপনা তৈরির মাধ্যমে কাজ করেছে এটি।

শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও এই ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

হাড়ের গঠন মজবুত করতে ভিটামিন ডি খুবই প্রয়োজনীয়

ভিটামিন ডি পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় সূর্যের আলো

এটা সত্য যে আপনি খাবার থেকে কিছু ভিটামিন ডি পেতে পারেন। কিন্তু শুধু খাদ্য থেকে যথেষ্ট পরিমাণে এটা পাওয়া খুব কঠিন।

এই ভিটামিনের সবচেয়ে ভালো খাদ্য উৎস হলো চর্বিযুক্ত মাছ যেমন- স্যামন, ম্যাকেরেল এবং সার্ডিনস।

আপনি যদি নিরামিষভোজী হন তাহলে ডিমের কুসুম ও মাশরুমে অল্প পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে।

কিন্তু খাবার থেকেই ভিটামিন ডি’র প্রয়োজনীয় পরিমাণের পুরোটা পাওয়া যথেষ্ট কঠিন হবে। তারচেয়ে ঘরের বাইরে কিছুক্ষণ থেকে এই প্রয়োজন মেটানো অনেক সহজ।

একবার সূর্যের আলো আপনার ত্বকে এসে লাগলে আপনার শরীর এটিকে শোষণ করতে এবং ভিটামিন ডি-তে রূপান্তর করতে শুরু করবে।

বেশিক্ষণ নয়, অল্প সময় রোদে থাকা হতে পারে উপকারী

কতক্ষণ রোদে থাকা যথেষ্ট?

সর্বোত্তম পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি করতে কী পরিমাণ সূর্যালোকের প্রয়োজন তা আপনার ত্বকের ধরন, আপনি কোথায় থাকেন এবং আপনি কতটা সংবেদনশীল তার ওপর নির্ভর করে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো––রোদে পুড়ে না যাওয়া।

গাঢ় রংয়ের ত্বকে মেলানিন নামের একটি পদার্থ বেশি থাকে যা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের মতো কাজ করে, বিকিরণ শোষণ করে এবং ত্বককে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এই সুরক্ষা শেষ পর্যন্ত ভিটামিন ডি সহজে তৈরি হতে বাধা দেয়।

আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে মুখে রোদ লাগানোই হয়তো যথেষ্ট হবে। কিন্তু আসলে উপকার পেতে হলে হাতের নিচের অংশ এবং পায়েও রোদ লাগানো উচিত। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বাইরে বের হলে কিছুটা লাভ হতে পারে, কারণ হালকা মেঘের ফাঁক গলে কিছুটা রশ্মি পেতে পারেন আপনি।

দিনের মাঝখানে আপনি রোদ্রস্নানের চেষ্টা করতে পারেন। কারণ ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি এড়িয়ে এই সময়টাই সর্বাধিক ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টারের অধ্যাপক অ্যান ওয়েব জানান, দিনের মাঝামাঝি সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে, তখন ঘর থেকে বের হওয়াটা আপত্তিকর মনে হতে পারে। কিন্তু দুপুরের খাবারের সময় হাঁটা হতে পারে আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন ডি’র ডোজ পাওয়ার সেরা উপায়।

তবে ঘরের বাইরে যদি অনেক বেশি সময় ধরে থাকতে হয় এবং ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাহলে সাবধান হতে হবে। সানস্ক্রিন লাগানোর কথা ভাবতে হবে এবং নিশ্চিত হত হবে যে এটি কমপক্ষে এসপিএফ ৩০ মানের।

কম সময়ের জন্য এবং ঘন ঘন রোদে যাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ

রোদে যেতে হবে বার বার, তবে কম সময়ের জন্য

কম সময়ের জন্য এবং ঘন ঘন সূর্যের আলোর নিচে যাওয়াটাই সর্বোত্তম পন্থা। একদিনে রোদে পুড়ে সবটা ভিটামিন ডি তৈরি করে নেবো–– এমন ভাবনা হবে ভুল।

সংবেদনশীল বা স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে বা এমন কোনো ওষুধ গ্রহণ করলে যা রোদের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়াবে, সেক্ষেত্রে আরও সাবধান হতে হবে।

কিছু লোকের জন্য বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটানো বা খোলা ত্বকে রোধ লাগানো কঠিন হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি’র ওষুধই কার্যকর হতে পারে বলেও গবেষকরা জানিয়েছেন।

এই লেখাটি ব্রিটেনের চিকিৎসক ও সাংবাদিক মাইকেল মোজলির পডকাস্ট ‘জাস্ট ওয়ান থিং’ এর সম্পাদিত সংস্করণ

বিবিসি নিউজ বাংলা

রোদের আলো কেন শরীরে লাগানো উচিত আপনার?

১০:২৫:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

বছরের পর বছর ধরে আমরা শুনে আসছি যে সানস্ক্রিন ছাড়া তীব্র রোদে বের হওয়া বিপজ্জনক। কিন্তু সত্য হলো, আমাদের শরীরের জন্য রোদের আলোরও দরকার আছে।

সূর্যের আলো আপনার মন-মেজাজ ভালো করতে পারে, রক্তচাপ কমাতে পারে, আপনার হাড়-পেশী––এমনকি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে পারে।

সূর্যের শক্তি

কিছুটা সময় বাইরে বসে থাকা, ত্বকে রোদের উষ্ণতা অনুভব করা আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো কাজ করতে পারে।

মনে রাখার বিষয় হলো, সরাসরি সূর্যালোক ছাড়া আমাদের শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে না, আর ভিটামিন ডি আমাদের হাড়, পেশী ও ইমিউন সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

কাজেই, ভিটামিন ডি বাড়াতে হলে রোদে যেতেই হবে।

আর গ্রীষ্মের মাসগুলোয় যখন উজ্জ্বল রোদের আলো থাকে চারপাশে, তখন শরীর ভিটামিন ডি সংগ্রহ করে রাখে যা শীতকালে কাজে আসে।

ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম থাকার সঙ্গে এটি ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যুক্ত। তাই সুস্থ থাকার জন্য আমাদের রোদে যেতেই হবে।

তবে ভিটামিন ডি পাওয়াই সূর্যের একমাত্র উপকারিতা নয়।

মানুষের মন-মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে রোদের আলো

মন-মেজাজ ভালো করে

রোদ দেখলে ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয়। এর কারণ হলো রোদের সংস্পর্শে আমাদের মস্তিষ্ক সেরোটোনিন নামের হরমোনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোন আমাদের মন-মেজাজ ভালো করে, মনকে শান্ত রাখতে ও মনোযোগ তৈরি করতেও সহায়তা করে।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে মেঘলা বা আবছা আলোর দিনগুলোর তুলনায় রোদ্রোজ্জ্বল দিনে মানুষের রক্তে সেরোটোনিনের মাত্রা বেশি থাকে।

এতে আরও দাবি করা হয়েছে, কোন ঋতু চলছে বা ঘরের বাইরে তাপমাত্রা কেমন তারচেয়েও মস্তিষ্কে সেরোটোনিন উৎপাদনের হার বেশি সম্পর্কিত সরাসরি উজ্জ্বল সূর্যালোকের সময়কালের সাথে। অর্থাৎ দিনের কতটা সময় ঝকঝকে রোদ দেখা যাচ্ছে তার ওপর সেরোটোনিন উৎপন্ন হওয়ার নির্ভর করছে অনেকটাই।

আবার এর বাইরেও এমন কিছু গবেষণা রয়েছে যেগুলোয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে সরাসরি সূর্যের আলো আপনার ত্বকের কোষগুলোকে এন্ডোরফিন (যাকে বলা হয় প্রাকৃতিক ব্যাথা উপশমকারী) তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে, যা আপনাকে ভালো বোধ করায়।

রক্তচাপ কমায়

শরীরের রক্তচাপ কমানোর ক্ষেত্রে রোদের সরাসরি ভূমিকা আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা একটি গবেষণায় দেখিয়েছেন, ২০ মিনিটের মতো সময় হাতে রোদ লাগালে তা ত্বকে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করার জন্য যথেষ্ট, যার ফলে রক্ত নালীগুলো প্রসারিত হয় এবং রক্তচাপ নেমে আসে।

স্বাস্থ্যের ওপর সূর্যালোকের নানা রকম উপকারী প্রভাব গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে

শক্তি বাড়ায়

আপনার বয়স যতই হোক না কেন, আপনার হাড়ের জন্য ভিটামিন ডি খুবই দরকারি এক উপাদান। এটি হাড়কে শক্তিশালী করে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি নেওয়ার কারণে অ্যাথলেটদের পেশীর শক্তি বেড়েছে। পেশীর কোষ বৃদ্ধিতে উদ্দীপনা তৈরির মাধ্যমে কাজ করেছে এটি।

শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রোধ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রেও এই ভিটামিনের প্রয়োজনীয়তা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।

হাড়ের গঠন মজবুত করতে ভিটামিন ডি খুবই প্রয়োজনীয়

ভিটামিন ডি পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় সূর্যের আলো

এটা সত্য যে আপনি খাবার থেকে কিছু ভিটামিন ডি পেতে পারেন। কিন্তু শুধু খাদ্য থেকে যথেষ্ট পরিমাণে এটা পাওয়া খুব কঠিন।

এই ভিটামিনের সবচেয়ে ভালো খাদ্য উৎস হলো চর্বিযুক্ত মাছ যেমন- স্যামন, ম্যাকেরেল এবং সার্ডিনস।

আপনি যদি নিরামিষভোজী হন তাহলে ডিমের কুসুম ও মাশরুমে অল্প পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে।

কিন্তু খাবার থেকেই ভিটামিন ডি’র প্রয়োজনীয় পরিমাণের পুরোটা পাওয়া যথেষ্ট কঠিন হবে। তারচেয়ে ঘরের বাইরে কিছুক্ষণ থেকে এই প্রয়োজন মেটানো অনেক সহজ।

একবার সূর্যের আলো আপনার ত্বকে এসে লাগলে আপনার শরীর এটিকে শোষণ করতে এবং ভিটামিন ডি-তে রূপান্তর করতে শুরু করবে।

বেশিক্ষণ নয়, অল্প সময় রোদে থাকা হতে পারে উপকারী

কতক্ষণ রোদে থাকা যথেষ্ট?

সর্বোত্তম পরিমাণ ভিটামিন ডি তৈরি করতে কী পরিমাণ সূর্যালোকের প্রয়োজন তা আপনার ত্বকের ধরন, আপনি কোথায় থাকেন এবং আপনি কতটা সংবেদনশীল তার ওপর নির্ভর করে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো––রোদে পুড়ে না যাওয়া।

গাঢ় রংয়ের ত্বকে মেলানিন নামের একটি পদার্থ বেশি থাকে যা প্রাকৃতিক সানস্ক্রিনের মতো কাজ করে, বিকিরণ শোষণ করে এবং ত্বককে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এই সুরক্ষা শেষ পর্যন্ত ভিটামিন ডি সহজে তৈরি হতে বাধা দেয়।

আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে মুখে রোদ লাগানোই হয়তো যথেষ্ট হবে। কিন্তু আসলে উপকার পেতে হলে হাতের নিচের অংশ এবং পায়েও রোদ লাগানো উচিত। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বাইরে বের হলে কিছুটা লাভ হতে পারে, কারণ হালকা মেঘের ফাঁক গলে কিছুটা রশ্মি পেতে পারেন আপনি।

দিনের মাঝখানে আপনি রোদ্রস্নানের চেষ্টা করতে পারেন। কারণ ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি এড়িয়ে এই সময়টাই সর্বাধিক ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানচেস্টারের অধ্যাপক অ্যান ওয়েব জানান, দিনের মাঝামাঝি সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপরে, তখন ঘর থেকে বের হওয়াটা আপত্তিকর মনে হতে পারে। কিন্তু দুপুরের খাবারের সময় হাঁটা হতে পারে আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন ডি’র ডোজ পাওয়ার সেরা উপায়।

তবে ঘরের বাইরে যদি অনেক বেশি সময় ধরে থাকতে হয় এবং ত্বক পুড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, তাহলে সাবধান হতে হবে। সানস্ক্রিন লাগানোর কথা ভাবতে হবে এবং নিশ্চিত হত হবে যে এটি কমপক্ষে এসপিএফ ৩০ মানের।

কম সময়ের জন্য এবং ঘন ঘন রোদে যাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ

রোদে যেতে হবে বার বার, তবে কম সময়ের জন্য

কম সময়ের জন্য এবং ঘন ঘন সূর্যের আলোর নিচে যাওয়াটাই সর্বোত্তম পন্থা। একদিনে রোদে পুড়ে সবটা ভিটামিন ডি তৈরি করে নেবো–– এমন ভাবনা হবে ভুল।

সংবেদনশীল বা স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে বা এমন কোনো ওষুধ গ্রহণ করলে যা রোদের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়াবে, সেক্ষেত্রে আরও সাবধান হতে হবে।

কিছু লোকের জন্য বাইরে পর্যাপ্ত সময় কাটানো বা খোলা ত্বকে রোধ লাগানো কঠিন হতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি’র ওষুধই কার্যকর হতে পারে বলেও গবেষকরা জানিয়েছেন।

এই লেখাটি ব্রিটেনের চিকিৎসক ও সাংবাদিক মাইকেল মোজলির পডকাস্ট ‘জাস্ট ওয়ান থিং’ এর সম্পাদিত সংস্করণ

বিবিসি নিউজ বাংলা