কোফতার কথা বলতে গেলে কালিয়ার কথা বলতে হয়। একরকম কালিয়া হতো ঢাকায় যার নাম ছিল জাহাজি কালিয়া। তার উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী খণ্ডে।
ঢাকার বৈশিষ্ট্য যদি কোনো কাবাব ধারণ করে থাকে তবে তা বর্তমানে সুতলি কাবাব যাকে হাকিম পারসান্দ কাবাব বলে উল্লেখ করেছেন। উনিশ শতকে ১০-১৫ সের মাংস কীমা বানিয়ে সুতার সঙ্গে লেপটে বা পেঁচিয়ে শিকে পোড়ানো হতো। এ কাবাব এখনো তৈরি হয় কিন্তু পরিমাণ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।

ঢাকাই খাসির রেজালা
কাবাবের সঙ্গে কোফতার প্রসঙ্গ আসবে। কোফতা যে রকমভাবে সব জায়গায় তৈরি হতো, এখানেও প্রক্রিয়া ছিল একই রকম। মিঠা কোফতা নামে উনিশ শতকে এক ধরনের কোফতা ছিল।
বেরেজি কোফতার কথা আগে উল্লেখ করেছি যা মিঠা কোফতা নামেও পরিচিত ছিল। এখন তা লুপ্ত।কোফতার কথা বলতে গেলে কালিয়ার কথা বলতে হয়। একরকম কালিয়া হতো ঢাকায় যার নাম ছিল জাহাজি কালিয়া। তার উল্লেখ আছে পূর্ববর্তী খণ্ডে।
কে এম মোহসীন প্রমুখের লেখায় আরেক ধরনের কালিয়ার উল্লেখ পাই। এর নাম কী ছিল জানি না। তবে তা রান্না করা হতো বাঁশের মোচা দিয়ে। কানিজ উল্লেখ করেছেন, কোরমা বা কালিয়া এসেছে তুরস্ক থেকে। তুর্কিরা কালিয়াতে মরিচ দিতেন না। ঢাকার কালিয়ায় হলুদ ও মরিচ দেয়া হতো।
আরেকটি খাবার ছিল যার নাম ছিল সিশরাঙা। সিশ ফারসি শব্দ যার মানে ছয়। অর্থাৎ সিশরাঙায় পাওয়া যেত ছয় রকমের স্বাদ। কানিজ উল্লেখ করেছেন সিশরাঙার উপাদান ছিল আটটি ডিম, এক পোয়া ঘি, দুই কাপ পেঁয়াজ কুচি, চারটি কমলালেবু বা লেবু এবং একটি আনারস।
মশলা হলো দারুচিনি, এলাচি, লং কিসমিস, এক চামচ চিনি, ডিম আগে সেদ্ধ করে ঘিয়ে ভাজা হতো। সব মিশিয়ে রান্না করা হতো। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, গরমের দিনে আনারস বাটা দেয়া হতো। আর শীতে কমলা লেবু। যারা ঝাল পছন্দ করতেন তারা এর সঙ্গে খানিকটা বাটা মরিচ মেশাতেন। পোলাও, ভাত বা রুটি দিয়ে সিশরাঙা খাওয়া হতো।
(চলবে)
মুনতাসীর মামুন 



















