আরব জগতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে বীজগণিতের ক্রমোন্নতিতে তাঁরা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
৬৪০ গ্রীষ্ট পূর্বাব্দে খেলিসের সময় থেকে গ্রীক গণিতশাস্ত্রের চর্চা শুরু হয়েছিল বলা যেতে পারে। এবং পীথাগোরাসের সময় থেকে চতুর্থ শতাব্দী পর্যন্ত গ্রীক গণিতশাস্ত্রের স্বর্ণযুগ চলেছিল 1² এই স্বর্ণযুগেই গ্রীকেরা বীজগণিত নিয়ে চর্চা করেছিলেন। ৪৬০ খ্রীষ্টপূর্বে চিওসের হিপোক্রেটস জ্যামিতির সাহায্যে x ² + √3/2 ax = a ² ধরণের সমীকরণ সমাধান করেছিন।
xy = k ², x – y = a ……..(1)
xy = k ², x + y =6 …………..(2)
xy = k ², x ² – y ² =a²………(3)
এই তিন ধরণের সমীকরণের সমাধান ৩০০ গ্রীষ্টপূর্বে রচিত ইউক্লিডের জ্যামিতিতে জ্যামিতিক পদ্ধতিতে সমাধান করা হয়েছিল। এছাড়াও x + ax = a ধরনের আর্কিমিডিসের গ্রন্থে এক মাত্রার সমীকরণের সমাধানও দেখতে পাওয়া যায়। অনির্ণেয় সমীকরণ ও আরও নানা জাতের বীজগণিতীয় সমীকরণ দেখতে পাওয়া যায়। হিরো (৫০ খ্রীঃ?) 144x(14 – x) = 6720 সমীকরণটির সমাধান করেছিলেন। এবং বীজগণিতের অন্যান্য কিছু সমীকরণ, সমাধান করেন। পদ্ধতিগতভাবে গ্রীকদের মধ্যে প্রথম বীজগণিত নিয়ে আলোচনা করেন তৃতীয় শতাব্দীর ভায়োফান্টাস (২৫০ খ্রীঃ)। তাঁর গ্রন্থে নিম্নলিখিত সমীকরণগুলির সমাধান দেখতে পাওয়া যায়।
(x+81)-(5x+1)=x, x=(x-22)+(x-24)(x-27)(x-20) প্রভৃতি। পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রীকদের একটি ধাঁধাঁ সংকলন ছিল। তাতে বীজগণিতের নানা উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়। যেমন এক জায়গায় বলা আছে-
“কতকগুলি আপেল ছিল, তা বণ্টন করে, এক তৃতীয়াংশ দেওয়া হ’ল একজনকে,. এক অষ্টমাংশ দেওয়া হ’ল দ্বিতীয়জনকে, এক চতুর্থাংশ দেওয়া হ’ল তৃতীয়জনকে, এক পঞ্চমাংশ দেওয়া হ’ল চতুর্থজনকে, ১০টি পঞ্চমজনকে এবং একটি ষষ্ঠজনকে। কয়টি। আপেল ছিল ? এটিকে আধুনিক বীজগণিতের ভাষায় লিখলে দাঁড়ায়-
![]()
সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দশক থেকে আরব্য গণিতশাস্ত্রের যাত্রা শুরু হয় এবং তখন থেকেই ভারতীয় ও গ্রীকগণিত গ্রন্থ তাঁদের ভাষায় অনূদিত হতে থাকে। এরপর আরবীয়রা দীর্ঘ একশ বছর ধরে ধৈর্য সহকারে এগুলি অনুধাবন করতে থাকে। আরব জগতের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে বীজগণিতের ক্রমোন্নতিতে তাঁরা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বীজগণিতে আরব জগতে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হয়েছিলেন যাঁরা তাদের মধ্যে আল-খারেজিমী, আল কারখি, ওমর খৈয়াম প্রমুখদের নাম উল্লেখযোগ্য। আমরা অনেকেই জানি আল খারেজিমীর হিন্দু-আরবীয় লিখন পদ্ধতির উপর লিখিত গ্রন্থটি ছাড়াও সমীকরণ সম্বন্ধে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থটির তিনি নাম দেন আল-জাবর-ও-আল-মুকাবাল। (অর্থাৎ সংযোজন ও বিয়োজন)।
(চলবে)
প্রদীপ কুমার মজুমদার 



















