০৩:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫
মহাকাশে উড়ে গেল মারিও: ‘সুপার মারিও গ্যালাক্সি’ ছবিতে রোজালিনার ভূমিকায় ব্রি লারসন হ্যারিকেন মেলিসায় বিধ্বস্ত দ্বীপে ‘জামাইকা স্ট্রং’ কনসার্টে এগিয়ে শ্যাগি–শন পল ফসিল জ্বালানির নির্গমন আবারও বেড়েছে, COP৩০ আলোচনায় চাপ বাড়ল ব্ল্যাক ফ্রাইডে–সাইবার মানডে ধরে সুইচ বিক্রির আরেক দফা জোর দিচ্ছে নিন্টেন্ডো ৪৩ দিনের রেকর্ড শাটডাউন শেষ করতে এগোলো যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস হাজার হাজার ‘ডেথ থ্রেট’ সইতে হচ্ছে গ্লোবাল গার্লগ্রুপ ক্যাটসআইকে ভালুকের হামলা বাড়ায় ‘গভর্নমেন্ট হান্টার’সহ নতুন পরিকল্পনা জাপানে নেট–জিরো লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়াল অস্ট্রেলিয়ার লিবারেল পার্টি ফায়ার টিভি স্টিকে পাইরেসি ঠেকাতে অ্যাপ ব্লক করছে অ্যামাজন ক্যাম্বোডিয়া–থাইল্যান্ড সীমান্তে আবার উত্তেজনা, যুদ্ধবিরতি চাপে

চীন ভারতের জন্য সার, রেয়ার আর্থ ও টানেল বোরিং মেশিন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল

কূটনৈতিক অগ্রগতির ফল
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে গত মাসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর বৈঠকের পর একটি বড় অগ্রগতি সামনে এসেছে। চীন জানিয়েছে, তারা ভারতের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এগুলো হলো—সার, রেয়ার আর্থ খনিজ ও টানেল বোরিং মেশিন।

ভারত এই তিনটি ক্ষেত্রকেই বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়েছিল। ওয়াং ই এখন দিল্লি সফরে আছেন এবং সোমবার তিনি জয়শঙ্করকে আশ্বস্ত করেন যে চীন ইতোমধ্যেই ভারতের অনুরোধে সাড়া দিতে শুরু করেছে। ভারতীয় সূত্র বলছে, কিছু চালান ইতোমধ্যে পাঠানোও শুরু হয়েছে।

ভারতের উদ্বেগ ও প্রভাবিত খাত
ভারত সরাসরি চীনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিল, কারণ হঠাৎ করে সার রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় রবি মৌসুমে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেটের (ডিএপি) ঘাটতি দেখা দেয়। একইভাবে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য টানেল বোরিং মেশিনের চালান আটকে দেওয়া হয়েছিল, এমনকি বিদেশি কোম্পানির চীনে তৈরি মেশিনও আটকে যায়।

এছাড়া অটোমোবাইল ও ইলেকট্রনিক শিল্পে রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট ও খনিজের ওপর চীনের সীমাবদ্ধতা বড় প্রভাব ফেলেছিল। এতে উৎপাদন সংকট দেখা দিচ্ছিল, যা ভারতের শিল্প খাতকে বিপদের মুখে ফেলতে পারত। মূলত দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনার কারণে বেইজিং এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিল।

রাজনৈতিক সমঝোতা ও উত্তেজনা প্রশমিতকরণ
গত মাসে ওয়াং ই ও জয়শঙ্করের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছিল। সীমান্তে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর রাজনৈতিক মতপার্থক্য কমাতে তারা বসেন। উভয় দেশই ধাপে ধাপে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে একমত হয়েছে। শুরু হয়েছে আস্থা তৈরির পদক্ষেপ, তারই ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা শিথিল হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও কৌশলগত বার্তা
এই সমঝোতা এমন এক সময়ে হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি কড়া অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে ওয়াশিংটনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবার নয়াদিল্লিকে সমালোচনা করছেন। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক (জাতীয় নিরাপত্তার কারণে) বসিয়েছে, ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে।

অন্যদিকে, একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক নমনীয় অবস্থান নিয়েছে। বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে এবং উচ্চপ্রযুক্তি চিপ রপ্তানির ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


চীনের এই সিদ্ধান্ত শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে এটি ভারত-চীন সম্পর্ককে নতুন আস্থার পথে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের টানাপোড়েনের সময়ে নয়াদিল্লিকে কিছুটা ভারসাম্য দিচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মহাকাশে উড়ে গেল মারিও: ‘সুপার মারিও গ্যালাক্সি’ ছবিতে রোজালিনার ভূমিকায় ব্রি লারসন

চীন ভারতের জন্য সার, রেয়ার আর্থ ও টানেল বোরিং মেশিন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল

১১:৫৪:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫

কূটনৈতিক অগ্রগতির ফল
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে গত মাসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-এর বৈঠকের পর একটি বড় অগ্রগতি সামনে এসেছে। চীন জানিয়েছে, তারা ভারতের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ খাতে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এগুলো হলো—সার, রেয়ার আর্থ খনিজ ও টানেল বোরিং মেশিন।

ভারত এই তিনটি ক্ষেত্রকেই বেইজিংয়ের সঙ্গে আলোচনায় গুরুত্ব দিয়েছিল। ওয়াং ই এখন দিল্লি সফরে আছেন এবং সোমবার তিনি জয়শঙ্করকে আশ্বস্ত করেন যে চীন ইতোমধ্যেই ভারতের অনুরোধে সাড়া দিতে শুরু করেছে। ভারতীয় সূত্র বলছে, কিছু চালান ইতোমধ্যে পাঠানোও শুরু হয়েছে।

ভারতের উদ্বেগ ও প্রভাবিত খাত
ভারত সরাসরি চীনের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিল, কারণ হঠাৎ করে সার রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় রবি মৌসুমে ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেটের (ডিএপি) ঘাটতি দেখা দেয়। একইভাবে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য টানেল বোরিং মেশিনের চালান আটকে দেওয়া হয়েছিল, এমনকি বিদেশি কোম্পানির চীনে তৈরি মেশিনও আটকে যায়।

এছাড়া অটোমোবাইল ও ইলেকট্রনিক শিল্পে রেয়ার আর্থ ম্যাগনেট ও খনিজের ওপর চীনের সীমাবদ্ধতা বড় প্রভাব ফেলেছিল। এতে উৎপাদন সংকট দেখা দিচ্ছিল, যা ভারতের শিল্প খাতকে বিপদের মুখে ফেলতে পারত। মূলত দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনার কারণে বেইজিং এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিল।

রাজনৈতিক সমঝোতা ও উত্তেজনা প্রশমিতকরণ
গত মাসে ওয়াং ই ও জয়শঙ্করের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হয়েছিল। সীমান্তে সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর রাজনৈতিক মতপার্থক্য কমাতে তারা বসেন। উভয় দেশই ধাপে ধাপে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়ে একমত হয়েছে। শুরু হয়েছে আস্থা তৈরির পদক্ষেপ, তারই ধারাবাহিকতায় অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা শিথিল হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট ও কৌশলগত বার্তা
এই সমঝোতা এমন এক সময়ে হলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের প্রতি কড়া অবস্থান নিয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে ওয়াশিংটনের শীর্ষ কর্মকর্তারা বারবার নয়াদিল্লিকে সমালোচনা করছেন। ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক (জাতীয় নিরাপত্তার কারণে) বসিয়েছে, ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে।

অন্যদিকে, একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ক্ষেত্রে তুলনামূলক নমনীয় অবস্থান নিয়েছে। বেইজিংয়ের সঙ্গে বাণিজ্যবিরতি আরও ৯০ দিন বাড়ানো হয়েছে এবং উচ্চপ্রযুক্তি চিপ রপ্তানির ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


চীনের এই সিদ্ধান্ত শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে এটি ভারত-চীন সম্পর্ককে নতুন আস্থার পথে নিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের টানাপোড়েনের সময়ে নয়াদিল্লিকে কিছুটা ভারসাম্য দিচ্ছে।