০৫:৩০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
পরিষ্কার জ্বালানির প্রবৃদ্ধিতে বৈশ্বিক নিঃসরণ স্থিতিশীল, তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বিশ্বজুড়ে এআই ব্যবহারের গতি বাড়ায় নতুন নিরাপত্তা স্তর ঘোষণা ওপেনএআইয়ের শীতের শুরুতে যুদ্ধের চাপ বাড়াচ্ছে ইউক্রেন, দীর্ঘ সংঘাতের ইঙ্গিত মস্কোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নতুন কড়াকড়ি, চাপের মুখে বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির চাপ বাড়ছে,মানবিক সহায়তা নিয়ে উদ্বেগ চীনের ওপর নির্ভরতা কমাতে ভিয়েতনামের বিরল খনিজে ১৯ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ এলএস ইকো এনার্জির নতুন মুম্বাই বিমানবন্দর চালু, উড়োজাহাজ খাতে আদানির এক লাখ কোটি টাকার বাজি চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত খনি কোম্পানির ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি, ইকুয়েডরের বড় তামা প্রকল্প কিনছে জিয়াংসি কপার সিউলই পারে যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া পরমাণু আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করতে: বাস্তবতার পথে নতুন কৌশল মার্কিন বাজারে ভারতের রপ্তানি বাড়লেও ভেতরে দুর্বলতার ইঙ্গিত দেখছেন বিশেষজ্ঞরা

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১০৬)

দশম পরিচ্ছেদ

সূর্য তখনও ছিল আকাশের অনেক ওপরে, কিন্তু আমি আর স্থির হয়ে বসে থাকতে পারছিলুম না। আমার চারপাশে যে-প্রস্তুতিপর্ব চলছিল আর টুকরো-

টুকরো যে-সব কথাবার্তা কানে আসছিল, তা থেকে বুঝতে পেরেছিলুম যে ওদের বাহিনী ওইদিন রাত্রেই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। রাত্তির পর্যন্ত সময় কাটাতে আর আমার মতলব হাসিল করতে হলে চারিদিকটা ভালো করে একবার দেখে রাখা দরকার এই মনে করে গ্রামের রাস্তা ধরে হাঁটতে শুরু করলুম। হাঁটতে-হাঁটতে একটা পুকুরের ধারে এসে হাজির হলুম আমি।

দেখলুম, কসাকরা তাদের ঘোড়াগুলোকে পুকুরে স্নান করাচ্ছে। স্নান করতে-করতে ঘোড়াগুলো ঘোঁৎ ঘোঁৎ করছিল আর পুকুরের নিচের নরম কাদায় খুর ঠুকে-ঠুকে আওয়াজ তুলছিল প্যাচপ্যাচ্ করে। ওদের নরম, মসৃণ আর চকচকে চামড়ার ওপর দিয়ে ঘোলাটে জল স্রোতের ধারার মতো গড়িয়ে ঝরে পড়ছিল।

পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে দাড়িওয়ালা, খালি-গা, গলায় ক্রুশ-ঝোলানো একজন কসাক তরোয়াল চালিয়ে একটা মোটা ঝাড়ুর ঝোপ কুপিয়ে কাটছিল। তরোয়ালটা মাথার ওপর পেছন দিকে তোলার সময় কসাকটা ঠোঁট দুটো চেপে রাখছিল, আর সজোরে নিচে নামিয়ে কোপ মারার সময় দম ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা সংক্ষিপ্ত আওয়াজ বের করছিল মুখ দিয়ে ‘উজ্‌জা!’ অনেকটা কসাই মাংস থোড়ার সময় যে-ধরনের অনির্দিষ্ট আওয়াজ করে মুখ থেকে, সেইরকম।

কান্তের ঘায়ে ঘাস যেভাবে কাটা পড়ে, ধারালো তরোয়ালের কোপে অত মোটা ঝাড়গাছটাও সেইভাবে নুয়ে পড়ল। ওই সময়ে লোকটার শত্রুর একটা হাত যদি ওব তরোয়ালের ফলার নিচে পড়ত, তাহলে ও সেই হাতটাকে দেহ থেকে সোজা এককোপে আলাদা করে দিত। আর লাল ফৌজের কোনো লোকের মাথা সামনে পড়লে ও বোধহয় তার মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত করে দিত দু-ফাঁক।

কসাকের তরোয়াল যে কী কাণ্ড করতে পারে তা এর আগেই আমার দেখার সুযোগ ঘটেছিল। দেখলে বিশ্বাসই হবে না যে পুরোদমে ঘোড়া ছুটিয়ে যেতে-যেতে সর্, একটা তরোয়ালের ফলা দিয়ে ওভাবে একঘায়ে একটা মানুষ মারা যেতে পারে। আঘাতের চিহ্ন দেখলে বরং মনে হবে, বহু মানুষ মারায় রীতিমতো হাত-পাকানো কোনো জল্লাদের ঠান্ডা মাথায় হিসেব-করা কুড়ুলের ঘা বুঝি ওটা।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

পরিষ্কার জ্বালানির প্রবৃদ্ধিতে বৈশ্বিক নিঃসরণ স্থিতিশীল, তবে চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে

রণক্ষেত্রে (পর্ব-১০৬)

০৮:০০:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দশম পরিচ্ছেদ

সূর্য তখনও ছিল আকাশের অনেক ওপরে, কিন্তু আমি আর স্থির হয়ে বসে থাকতে পারছিলুম না। আমার চারপাশে যে-প্রস্তুতিপর্ব চলছিল আর টুকরো-

টুকরো যে-সব কথাবার্তা কানে আসছিল, তা থেকে বুঝতে পেরেছিলুম যে ওদের বাহিনী ওইদিন রাত্রেই গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছে। রাত্তির পর্যন্ত সময় কাটাতে আর আমার মতলব হাসিল করতে হলে চারিদিকটা ভালো করে একবার দেখে রাখা দরকার এই মনে করে গ্রামের রাস্তা ধরে হাঁটতে শুরু করলুম। হাঁটতে-হাঁটতে একটা পুকুরের ধারে এসে হাজির হলুম আমি।

দেখলুম, কসাকরা তাদের ঘোড়াগুলোকে পুকুরে স্নান করাচ্ছে। স্নান করতে-করতে ঘোড়াগুলো ঘোঁৎ ঘোঁৎ করছিল আর পুকুরের নিচের নরম কাদায় খুর ঠুকে-ঠুকে আওয়াজ তুলছিল প্যাচপ্যাচ্ করে। ওদের নরম, মসৃণ আর চকচকে চামড়ার ওপর দিয়ে ঘোলাটে জল স্রোতের ধারার মতো গড়িয়ে ঝরে পড়ছিল।

পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে দাড়িওয়ালা, খালি-গা, গলায় ক্রুশ-ঝোলানো একজন কসাক তরোয়াল চালিয়ে একটা মোটা ঝাড়ুর ঝোপ কুপিয়ে কাটছিল। তরোয়ালটা মাথার ওপর পেছন দিকে তোলার সময় কসাকটা ঠোঁট দুটো চেপে রাখছিল, আর সজোরে নিচে নামিয়ে কোপ মারার সময় দম ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা সংক্ষিপ্ত আওয়াজ বের করছিল মুখ দিয়ে ‘উজ্‌জা!’ অনেকটা কসাই মাংস থোড়ার সময় যে-ধরনের অনির্দিষ্ট আওয়াজ করে মুখ থেকে, সেইরকম।

কান্তের ঘায়ে ঘাস যেভাবে কাটা পড়ে, ধারালো তরোয়ালের কোপে অত মোটা ঝাড়গাছটাও সেইভাবে নুয়ে পড়ল। ওই সময়ে লোকটার শত্রুর একটা হাত যদি ওব তরোয়ালের ফলার নিচে পড়ত, তাহলে ও সেই হাতটাকে দেহ থেকে সোজা এককোপে আলাদা করে দিত। আর লাল ফৌজের কোনো লোকের মাথা সামনে পড়লে ও বোধহয় তার মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত করে দিত দু-ফাঁক।

কসাকের তরোয়াল যে কী কাণ্ড করতে পারে তা এর আগেই আমার দেখার সুযোগ ঘটেছিল। দেখলে বিশ্বাসই হবে না যে পুরোদমে ঘোড়া ছুটিয়ে যেতে-যেতে সর্, একটা তরোয়ালের ফলা দিয়ে ওভাবে একঘায়ে একটা মানুষ মারা যেতে পারে। আঘাতের চিহ্ন দেখলে বরং মনে হবে, বহু মানুষ মারায় রীতিমতো হাত-পাকানো কোনো জল্লাদের ঠান্ডা মাথায় হিসেব-করা কুড়ুলের ঘা বুঝি ওটা।