০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ইফতারে দাম বৃদ্ধির চাপ: সাধারণ মানুষের কষ্ট ও বাজারের সংকট

  • Sarakhon Report
  • ০৪:১১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • 15

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ 

  • গত বছরের তুলনায় ইফতারের প্রধান খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে
  • দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দৈনন্দিন শ্রমিকরা উদ্বেগের মুখে পড়েছেন
  • কয়েক মাস ধরে চাল, তেল, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে

১. ইফতারের প্রধান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি

গত বছরের তুলনায় ইফতারের মূল খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ:

  • পেঁয়াজ: আগে ২-৩ টাকায় পাওয়া যেত, এখন ৬-১০ টাকা।
  • ছোলা: পূর্বে ১০ টাকায় একটি প্লেট, এখন ২০ টাকা।
  • বেগুনি: আগে ৩-৫ টাকায়, বর্তমানে ৬-১০ টাকা।
  • জিলাপি: পূর্বে ৬-৮ টাকায়, এখন ১০-১৫ টাকা।
  • বাংলা কলা: আগে ৮-১০ টাকায়, মাত্র দুই দিনের মধ্যে বেড়ে ১৫-২০ টাকা হয়েছে।

এর পাশাপাশি মুড়ি, চিড়া, লেবু, শসা ও কাঁচামরিচের দামও সাম্প্রতিককালে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েছে।

২. সাধারণ মানুষের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দৈনন্দিন শ্রমিকরা উদ্বেগের মুখে পড়েছেন।
অনেকের বলার মতে, আগে ৫০ টাকায় সহজে পেট ভরা ইফতার করা যেত, তবে এখন সেই পরিমাণ অর্থে যথাযথ খাবার সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

৩. খুলনার বাস্তব অভিজ্ঞতা

রিকশাচালক  ইসমাইল হোসেন
খুলনার খালিস পুরের ইসমাইল হোসেন বলেন,
“রোজা রেখে রিকশা চালানো কঠিন হলেও, রোজায় কিছুটা সান্ত্বনা পাওয়া যায়। তবে এবার প্রায় সবকিছু আগের তুলনায় অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ৫০ টাকায় দু-তিন ধরনের আইটেম কেনা মুশকিল হয়ে পড়েছে।”

দিনমজুর রফিকুল মওলা
নতুন বাজারে কর্মরত সোহবান জানান,
“আগের মতো কাজ আর সম্ভব নয়। আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেক গুণ বেশি হয়ে গেছে। প্রতিদিনের খরচ মেটানো এখন কঠিন, এমনকি পরিবারের জন্য টাকা পাঠানোও সহজ হচ্ছে না।”

৪. নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজারে মূল্যস্ফীতি

কয়েক মাস ধরে চাল, তেল, ডাল, চিনি সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে:

  • চাল: ৫০ কেজি চালের দাম ছিল ৩২০০ টাকা, বর্তমানে ৩৮০০ টাকারও বেশি।
  • তেল: সরকার ১৭৫ টাকায় সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করলেও, কিছু জায়গায় ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
  • সবজি ও ফল:
    • বেগুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকায় থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকায় হয়েছে।
    • ছোট শসার দাম ৩০-৪০ টাকায় থেকে ৬০-৮০ টাকায় উঠেছে।
    • লেবুর দাম প্রতি পিস বেড়ে ১৫-২০ টাকায়, যার ফলে ডজনের দাম ২০০ টাকারও বেশি হয়ে গেছে।

৫. কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মন্তব্য

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান,
“নতুন সরকার আসলেও সামগ্রীর উচ্চমূল্যায়নের সমস্যার থেকে ভোক্তাদের আর কোনো স্বস্তি পাচ্ছে না। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রীর দাম এত বেড়ে গেছে যে, কম আয়ের মানুষের পক্ষে সস্তায় পেট ভরা ইফতার করা আর সম্ভব হচ্ছে না।”

ইফতারে দাম বৃদ্ধির চাপ: সাধারণ মানুষের কষ্ট ও বাজারের সংকট

০৪:১১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট

সারাংশ 

  • গত বছরের তুলনায় ইফতারের প্রধান খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে
  • দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দৈনন্দিন শ্রমিকরা উদ্বেগের মুখে পড়েছেন
  • কয়েক মাস ধরে চাল, তেল, ডাল, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে

১. ইফতারের প্রধান সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি

গত বছরের তুলনায় ইফতারের মূল খাদ্যদ্রব্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপ:

  • পেঁয়াজ: আগে ২-৩ টাকায় পাওয়া যেত, এখন ৬-১০ টাকা।
  • ছোলা: পূর্বে ১০ টাকায় একটি প্লেট, এখন ২০ টাকা।
  • বেগুনি: আগে ৩-৫ টাকায়, বর্তমানে ৬-১০ টাকা।
  • জিলাপি: পূর্বে ৬-৮ টাকায়, এখন ১০-১৫ টাকা।
  • বাংলা কলা: আগে ৮-১০ টাকায়, মাত্র দুই দিনের মধ্যে বেড়ে ১৫-২০ টাকা হয়েছে।

এর পাশাপাশি মুড়ি, চিড়া, লেবু, শসা ও কাঁচামরিচের দামও সাম্প্রতিককালে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েছে।

২. সাধারণ মানুষের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

দাম বৃদ্ধির কারণে নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দৈনন্দিন শ্রমিকরা উদ্বেগের মুখে পড়েছেন।
অনেকের বলার মতে, আগে ৫০ টাকায় সহজে পেট ভরা ইফতার করা যেত, তবে এখন সেই পরিমাণ অর্থে যথাযথ খাবার সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

৩. খুলনার বাস্তব অভিজ্ঞতা

রিকশাচালক  ইসমাইল হোসেন
খুলনার খালিস পুরের ইসমাইল হোসেন বলেন,
“রোজা রেখে রিকশা চালানো কঠিন হলেও, রোজায় কিছুটা সান্ত্বনা পাওয়া যায়। তবে এবার প্রায় সবকিছু আগের তুলনায় অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ৫০ টাকায় দু-তিন ধরনের আইটেম কেনা মুশকিল হয়ে পড়েছে।”

দিনমজুর রফিকুল মওলা
নতুন বাজারে কর্মরত সোহবান জানান,
“আগের মতো কাজ আর সম্ভব নয়। আয়ের তুলনায় ব্যয় অনেক গুণ বেশি হয়ে গেছে। প্রতিদিনের খরচ মেটানো এখন কঠিন, এমনকি পরিবারের জন্য টাকা পাঠানোও সহজ হচ্ছে না।”

৪. নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজারে মূল্যস্ফীতি

কয়েক মাস ধরে চাল, তেল, ডাল, চিনি সহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে:

  • চাল: ৫০ কেজি চালের দাম ছিল ৩২০০ টাকা, বর্তমানে ৩৮০০ টাকারও বেশি।
  • তেল: সরকার ১৭৫ টাকায় সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করলেও, কিছু জায়গায় ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
  • সবজি ও ফল:
    • বেগুনের দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকায় থেকে বেড়ে ৫০-৬০ টাকায় হয়েছে।
    • ছোট শসার দাম ৩০-৪০ টাকায় থেকে ৬০-৮০ টাকায় উঠেছে।
    • লেবুর দাম প্রতি পিস বেড়ে ১৫-২০ টাকায়, যার ফলে ডজনের দাম ২০০ টাকারও বেশি হয়ে গেছে।

৫. কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মন্তব্য

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন জানান,
“নতুন সরকার আসলেও সামগ্রীর উচ্চমূল্যায়নের সমস্যার থেকে ভোক্তাদের আর কোনো স্বস্তি পাচ্ছে না। চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রীর দাম এত বেড়ে গেছে যে, কম আয়ের মানুষের পক্ষে সস্তায় পেট ভরা ইফতার করা আর সম্ভব হচ্ছে না।”