সারাক্ষণ রিপোর্ট
সারাংশ
- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের তিনজন পরিচালক ৪.৫ মিলিয়ন শেয়ার কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন
- গত বছরও স্পনসররা ৬৬ মিলিয়ন শেয়ার ক্রয় করে তাদের অংশীদারিত্ব বাড়িয়েছেন
- অর্থনৈতিক চাপে শেয়ার বাজার দুর্বল থাকলেও, স্পনসর-পরিচালকদের শেয়ার ক্রয় তাদের কোম্পানির প্রতি আস্থা প্রকাশ করে
বিভিন্ন শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের স্পনসর-পরিচালকরা নিজেরাই শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানিতে নিজেদের অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছেন। একই সময়ে, প্রতিষ্ঠানগত ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন। এই পরিবর্তন স্পনসরদের কোম্পানির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করে।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের উদাহরণ
- শেয়ার ক্রয়ের পরিকল্পনা:
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের তিনজন পরিচালক সম্প্রতি ৪.৫ মিলিয়ন শেয়ার কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শেয়ারটির বর্তমান মূল্য ২১৭ টাকা হলে, এর মোট বাজার মূল্য প্রায় ৯৭৬ মিলিয়নেরও বেশি হবে।
- অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি:
গত বছরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত স্পনসররা ৬৬ মিলিয়ন শেয়ার ক্রয় করে তাদের অংশীদারিত্ব ৩৫.৪৬% থেকে ৪২.৯১%-এ নিয়ে আসেন। এর মাধ্যমে, গড় বাজার মূল্যে শেয়ারের মূল্য ১৪ বিলিয়নেরও বেশি হয়েছিল। সাম্প্রতিক ক্রয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে কোম্পানির মালিকানার পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

এপেক্স ফুডওয়্যার ও এসিআই-এর কার্যক্রম
- এপেক্স ফুডওয়্যার:
দেশের সর্ববৃহৎ জুতো প্রস্তুতকারী এপেক্স ফুডওয়্যারের চেয়ারম্যান সম্প্রতি শেয়ার ক্রয় সম্পন্ন করেছেন।
- এসিআই:
এসিআই-এর চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মনোনীত পরিচালকও নিজেদের কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন।
- বিশ্লেষকের মন্তব্য:
এক বিশ্লেষক বলেন, “অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের সহকর্মীদের তুলনায় ভালো ফলাফল দেখাচ্ছে।” এটি বোঝায় যে, যখন স্পনসররা বর্তমান শেয়ার মূল্যকে ন্যায্য মূল্যের নিচে মূল্যায়ন করেন, তখন তারা শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ উন্নতির প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
বাজারের বর্তমান অবস্থা ও বিশ্লেষণ
- অর্থনৈতিক চাপ ও বাজার অবস্থা:
অর্থনৈতিক চাপে শেয়ার বাজার দীর্ঘ সময় দুর্বল থাকলেও, স্পনসর-পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তাদের কোম্পানির প্রতি আস্থা ও ভবিষ্যৎ উন্নতির প্রত্যয় ফুটে ওঠে।

- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের অবস্থান:
১৯৮৫ থেকে দেশের ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ক্রমাগত বিক্রয় ও মুনাফা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- প্রথমার্ধে অর্থবছর ২৫-তে, স্কয়ার ফার্মা ১৩% বৃদ্ধি পেয়ে ১২.৭০ বিলিয়ন টাকার মুনাফা অর্জন করে।
- পূর্বের অর্থবছরে, রেকর্ড নেট বিক্রয়ের ভিত্তিতে ২০.৯৩ বিলিয়ন টাকার মুনাফা এবং ১১০% সর্বোচ্চ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিল।
- পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়:
- স্যামুয়েল এস. চৌধুরী, আনজান চৌধুরী ও তপন চৌধুরী প্রায় প্রত্যেকে ১.৫ মিলিয়ন শেয়ার ক্রয়ের পরিকল্পনা বা ক্রয় করেছেন।
- বর্তমানে, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসেবে ১৯২.৮ বিলিয়ন টাকার বাজার মূল্যের অধিকারী।
- গত ২০২৩ সালে, এই পরিচালকরা মিলিয়ে ৯ মিলিয়ন শেয়ার ক্রয় করেন, যদিও বাজার তখন অনিশ্চিত ছিল।
- এপেক্স ও এসিআই-এর অন্যান্য কার্যক্রম:
- এপেক্স ফুডওয়্যারের চেয়ারম্যান, সাইয়েদ মনজুর এলাহী, সাম্প্রতিক সময়ে ৫০,০০০ শেয়ার ক্রয় করেন, যেখানে গত বছরে তিনি ২০০,০০০ শেয়ারও ক্রয় করেছিলেন।
- এসিআই-এর সংযুক্ত আয় জুলাই-ডিসেম্বরের মধ্যে ৬% বৃদ্ধি পেয়ে ৬৬.২ বিলিয়ন টাকায় পৌঁছলেও, উচ্চ ঋণের ব্যয়ের কারণে ৬৪৬ মিলিয়ন টাকার ক্ষতি হয়েছে।

-
- এসিআই বিভিন্ন খাতে কার্যক্রম চালায়; যানবাহন ও ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগের মুনাফা থাকলেও, অন্যান্য বিভাগে ক্ষতির ফলে সামগ্রিক ক্ষতি হয়েছে।
- তবু, এসিআই-এর তিনজন স্পনসর-পরিচালক গত দুই মাসে ৬.২১ মিলিয়ন শেয়ার ক্রয় করে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ বিলিয়নেরও বেশি।
- বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিষ্ঠান মালিকরা যখন শেয়ারকে ন্যায্য মূল্যের নিচে মূল্যায়ন করেন, তখন শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে নিজেদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করেন।
উপসংহার
স্পনসর-পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের প্রবণতা স্পষ্ট করে যে, তারা নিজেদের কোম্পানির উন্নতি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় দৃঢ় আস্থা রাখেন। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসসহ কিছু কোম্পানি দুর্দান্ত পারফরমেন্স প্রদর্শন করে বাজারের অবনতি সত্ত্বেও সফলতার গল্প রচনা করতে সক্ষম হয়েছে।
Leave a Reply