০১:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

রাতের অপারেশনে ইরানি সামরিক নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন — ইসরায়েলের রাইজিং লায়ন কৌশল

ভয়াবহ রাত: নতুন করে ধাক্কা খেলো ইরান

২০২৫ সালের জুনে মধ্যপ্রাচ্য প্রত্যক্ষ করল নজিরবিহীন এক সামরিক অভিযান। ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর আওতায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক নেতৃত্বের উপর একযোগে হামলা চালিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে। এক রাতের এই অভিযানে ইরানের সামরিক কমান্ড স্তম্ভপ্রায় ধসে পড়ে। নিহত হন আইআরজিসি প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাগেরি, ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহসহ অন্তত ২০ জন সামরিক শীর্ষ নেতা। প্রাণ হারান ৬ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানীও।

সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড: ছায়াযুদ্ধের সূচনা

এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের বড় বাঁক আসে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। এই হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করা

সোলেইমানির মৃত্যুর পর ইসরায়েল তাদের আঘাতকে বিস্তৃত করে। ২০২০ সাল থেকে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানী মোসেন ফাখরিজাদেহসহ একের পর এক পারমাণবিক বিজ্ঞানী হত্যা করা হয়। এই অপারেশনগুলোতে ড্রোন, রিমোট-কন্ট্রোল মেশিনগান এবং উচ্চ প্রযুক্তির গোয়েন্দা ব্যবস্থার সমন্বয় ছিল।

রাইজিং লায়ন: এক রাতের সর্ববৃহৎ অপারেশন

২০২৫ সালের জুনে চালানো হয় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। প্রায় ২০০ যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সাইবার জ্যামিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। লক্ষ্যবস্তু করা হয় নাতাঞ্জের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র সাইট, কমান্ড সেন্টার ও আইআরজিসি সদরদপ্তর। মোসাদ ও আইডিএফ-এর যৌথ পরিকল্পনায় ৬ মাস ধরে এই অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

আমাদের প্রতিশোধের 'কোনো সীমা' থাকবে না : ইরান | আন্তর্জাতিক | বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক মেরুকরণ

এই হামলার পর ইরান প্রতিশোধের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত বড় আকারের পাল্টা হামলা চালায়নি। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও ইসরায়েলের প্রতি তাদের নীতিগত সমর্থন অস্বীকার করা কঠিন। মধ্যপ্রাচ্য এখন উত্তপ্ত, যে কোনো সময় সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে।

ছায়াযুদ্ধের পরবর্তী ধাপ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েল ধাপে ধাপে ইরানের সামরিক নেতৃত্বকে নেতৃত্বহীন করে দিচ্ছে। এতে তাদের প্রতিরক্ষা কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং কূটনৈতিক আলোচনায় পশ্চিমা শক্তিগুলোর সামনে ইরান ক্রমেই আরও চাপে পড়ছে।

রাতের অপারেশনে ইরানি সামরিক নেতৃত্ব নিশ্চিহ্ন — ইসরায়েলের রাইজিং লায়ন কৌশল

০৪:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

ভয়াবহ রাত: নতুন করে ধাক্কা খেলো ইরান

২০২৫ সালের জুনে মধ্যপ্রাচ্য প্রত্যক্ষ করল নজিরবিহীন এক সামরিক অভিযান। ইসরায়েলের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর আওতায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক নেতৃত্বের উপর একযোগে হামলা চালিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ ছড়িয়েছে। এক রাতের এই অভিযানে ইরানের সামরিক কমান্ড স্তম্ভপ্রায় ধসে পড়ে। নিহত হন আইআরজিসি প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি, চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ বাগেরি, ক্ষেপণাস্ত্র ইউনিটের প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহসহ অন্তত ২০ জন সামরিক শীর্ষ নেতা। প্রাণ হারান ৬ জন পারমাণবিক বিজ্ঞানীও।

সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড: ছায়াযুদ্ধের সূচনা

এই ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের বড় বাঁক আসে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছিল। এই হত্যাকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করা

সোলেইমানির মৃত্যুর পর ইসরায়েল তাদের আঘাতকে বিস্তৃত করে। ২০২০ সাল থেকে নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানী মোসেন ফাখরিজাদেহসহ একের পর এক পারমাণবিক বিজ্ঞানী হত্যা করা হয়। এই অপারেশনগুলোতে ড্রোন, রিমোট-কন্ট্রোল মেশিনগান এবং উচ্চ প্রযুক্তির গোয়েন্দা ব্যবস্থার সমন্বয় ছিল।

রাইজিং লায়ন: এক রাতের সর্ববৃহৎ অপারেশন

২০২৫ সালের জুনে চালানো হয় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। প্রায় ২০০ যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সাইবার জ্যামিং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। লক্ষ্যবস্তু করা হয় নাতাঞ্জের ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র সাইট, কমান্ড সেন্টার ও আইআরজিসি সদরদপ্তর। মোসাদ ও আইডিএফ-এর যৌথ পরিকল্পনায় ৬ মাস ধরে এই অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

আমাদের প্রতিশোধের 'কোনো সীমা' থাকবে না : ইরান | আন্তর্জাতিক | বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক মেরুকরণ

এই হামলার পর ইরান প্রতিশোধের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত বড় আকারের পাল্টা হামলা চালায়নি। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সম্পৃক্ততা অস্বীকার করলেও ইসরায়েলের প্রতি তাদের নীতিগত সমর্থন অস্বীকার করা কঠিন। মধ্যপ্রাচ্য এখন উত্তপ্ত, যে কোনো সময় সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে সিরিয়া, লেবানন ও ইরাকে।

ছায়াযুদ্ধের পরবর্তী ধাপ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েল ধাপে ধাপে ইরানের সামরিক নেতৃত্বকে নেতৃত্বহীন করে দিচ্ছে। এতে তাদের প্রতিরক্ষা কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং কূটনৈতিক আলোচনায় পশ্চিমা শক্তিগুলোর সামনে ইরান ক্রমেই আরও চাপে পড়ছে।