০৩:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
চীনা গবেষকদের নতুন তত্ত্ব: সময় কি সত্যিই পেছনে যায় না ফুজিয়ান যুদ্ধজাহাজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা, জে–১০সি’র সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা: ২০২৫ সালে চীনের সামরিক অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ দিক ব্রোঞ্জ যুগের কবরস্থান জানাল প্রাচীন চীনে লাল চালের মদ তৈরির রহস্য চীনের অফশোর ইউয়ান বড় মানসিক সীমা ভেঙে শক্তিশালী, মূল্যবৃদ্ধির গতি জোরালো ৫০ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগে আলোচিত ‘জুলাইযোদ্ধা’ সুরভী গ্রেপ্তার চার্চে উড়ো চিঠি ও হুমকিতে উদ্বেগ বাংলাদেশের খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতাদের জামায়াতের সঙ্গে জোটে এনসিপি কার্যত বিলীন হবে: আব্দুল কাদের রাউজানে একের পর এক হিন্দু বাড়িতে পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ, তথ্য দিলে পুরস্কার ঘোষণা পুলিশের রাউজানে একের পর এক হিন্দু বাড়িতে পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ, তথ্য দিলে পুরস্কার ঘোষণা পুলিশের অ্যাশেজে ধাক্কা আর চাপের মুখে বেন স্টোকস, সতীর্থদের জন্য সহমর্মিতা চাইলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক

শিশুর জন্য সহানুভূতির বাসস্টপ চীনের হুবেইতে

  • Sarakhon Report
  • ০৯:৫১:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫
  • 99

চীনের হুবেই প্রদেশের শিয়াংইয়াং শহরে আছে বিশেষ এক ‘সহানুভূতির বাসস্টপ’। সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত এক কিশোরের জন্যই তৈরি হয়েছে এ বাসস্টপ। শহরের গণপরিবহনে এটি বিরল ঘটনা। আর পেছনে আছে টানা তিন বছরের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টা। শহরের দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি যত্ন ও আন্তরিকতার এক হৃদয়স্পর্শী গল্পই বলে এটি। ১৫ বছর বয়সি শাং চিপেং প্রতিদিন সকাল ৭টায় মাকে বিদায় জানিয়ে বাস নম্বর ৭৩-এ ওঠে।

চালক মেই মেং তার হাত ধরে সিটে বসিয়ে দেন, যেন আয়নার মাধ্যমে সারাক্ষণ তার দিকে নজর রাখতে পারেন। ঘণ্টাখানেক পর বাস থামলে বাকি যাত্রীরা নেমে যায়, শাং নেমে যায় বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিশেং স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের কাছে তৈরি এই বিশেষ বাসস্টপে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম শাং ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা হয় মেই মেং-এর। জানতে পারেন, চিয়াং রাতে কাজ করে দিনে ছেলেকে নিয়ে ২ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতেন—শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ কষ্টকর ছিল এ যাত্রা।

এরপর থেকে মেই ও তার সহকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শাংকে প্রতিদিন সকালে স্কুলে পৌঁছে দেন এবং বিকেলে ফিরিয়ে আনেন। ইতিমধ্যে ৮০০ দিনেরও বেশি সময়ে তারা ১,৬০০ বারেরও বেশি যাতায়াত করেছেন। মেই বলেন, ‘আমি জানি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের পরিবার কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায়। আমি চাইতাম ছেলেটি যেন যত্নের অনুভূতি পায়, আর পরিবার বুঝতে পারে সমাজ তাদের পাশে আছে।’ এক গ্রীষ্মে মেই যখন শাং-এর বাড়ি যান, দেখেন ঘরটি ছোট ও ভ্যাপসা গরমে ভরপুর—কোনো এয়ারকন্ডিশনার নেই।

তিনি উপলব্ধি করেন, সামর্থ্য না থাকলেও অন্তত স্কুলযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। মা জানান, আগে প্রতিদিন তাকে ছেলের সঙ্গে যেতে হতো। এখন চালকরা দায়িত্ব নেওয়ায় তিনি রাতের কাজ ছেড়ে বাড়ির কাছে দিনের চাকরি শুরু করেছেন। তিনি আরও জানান, মেই শুধু যাতায়াতেই সহায়তা করেন না, প্রায়ই শাং-এর জন্য ফল ও খাবার নিয়ে আসেন।

একবার শিশু দিবসের আগে শাং অসুস্থ হয়ে স্কুল যেতে পারেনি, তবুও মেই তার জন্য আগেই উপহার প্রস্তুত করেছিলেন। উপহার পেয়ে শাং আনন্দে নাচছিল, আলিঙ্গন ও চুমুতে প্রকাশ করেছিল অগাধ কৃতজ্ঞতা। শহরের প্রথম এ ‘সহানুভূতির বাসস্টপ’ এখন স্থানীয়দের কাছে মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

সিএমজি বাংলা

জনপ্রিয় সংবাদ

চীনা গবেষকদের নতুন তত্ত্ব: সময় কি সত্যিই পেছনে যায় না

শিশুর জন্য সহানুভূতির বাসস্টপ চীনের হুবেইতে

০৯:৫১:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫

চীনের হুবেই প্রদেশের শিয়াংইয়াং শহরে আছে বিশেষ এক ‘সহানুভূতির বাসস্টপ’। সেরিব্রাল পালসি আক্রান্ত এক কিশোরের জন্যই তৈরি হয়েছে এ বাসস্টপ। শহরের গণপরিবহনে এটি বিরল ঘটনা। আর পেছনে আছে টানা তিন বছরের নিবেদিতপ্রাণ প্রচেষ্টা। শহরের দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি যত্ন ও আন্তরিকতার এক হৃদয়স্পর্শী গল্পই বলে এটি। ১৫ বছর বয়সি শাং চিপেং প্রতিদিন সকাল ৭টায় মাকে বিদায় জানিয়ে বাস নম্বর ৭৩-এ ওঠে।

চালক মেই মেং তার হাত ধরে সিটে বসিয়ে দেন, যেন আয়নার মাধ্যমে সারাক্ষণ তার দিকে নজর রাখতে পারেন। ঘণ্টাখানেক পর বাস থামলে বাকি যাত্রীরা নেমে যায়, শাং নেমে যায় বিশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চিশেং স্পেশাল এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং স্কুলের কাছে তৈরি এই বিশেষ বাসস্টপে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম শাং ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা হয় মেই মেং-এর। জানতে পারেন, চিয়াং রাতে কাজ করে দিনে ছেলেকে নিয়ে ২ কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতেন—শারীরিক ও মানসিকভাবে ভীষণ কষ্টকর ছিল এ যাত্রা।

এরপর থেকে মেই ও তার সহকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে শাংকে প্রতিদিন সকালে স্কুলে পৌঁছে দেন এবং বিকেলে ফিরিয়ে আনেন। ইতিমধ্যে ৮০০ দিনেরও বেশি সময়ে তারা ১,৬০০ বারেরও বেশি যাতায়াত করেছেন। মেই বলেন, ‘আমি জানি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের পরিবার কতটা কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায়। আমি চাইতাম ছেলেটি যেন যত্নের অনুভূতি পায়, আর পরিবার বুঝতে পারে সমাজ তাদের পাশে আছে।’ এক গ্রীষ্মে মেই যখন শাং-এর বাড়ি যান, দেখেন ঘরটি ছোট ও ভ্যাপসা গরমে ভরপুর—কোনো এয়ারকন্ডিশনার নেই।

তিনি উপলব্ধি করেন, সামর্থ্য না থাকলেও অন্তত স্কুলযাত্রায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন। মা জানান, আগে প্রতিদিন তাকে ছেলের সঙ্গে যেতে হতো। এখন চালকরা দায়িত্ব নেওয়ায় তিনি রাতের কাজ ছেড়ে বাড়ির কাছে দিনের চাকরি শুরু করেছেন। তিনি আরও জানান, মেই শুধু যাতায়াতেই সহায়তা করেন না, প্রায়ই শাং-এর জন্য ফল ও খাবার নিয়ে আসেন।

একবার শিশু দিবসের আগে শাং অসুস্থ হয়ে স্কুল যেতে পারেনি, তবুও মেই তার জন্য আগেই উপহার প্রস্তুত করেছিলেন। উপহার পেয়ে শাং আনন্দে নাচছিল, আলিঙ্গন ও চুমুতে প্রকাশ করেছিল অগাধ কৃতজ্ঞতা। শহরের প্রথম এ ‘সহানুভূতির বাসস্টপ’ এখন স্থানীয়দের কাছে মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে।

সিএমজি বাংলা