বাণিজ্য আলোচনায় ‘লাল রেখা’
বাণিজ্য আলোচনার অবস্থা
ভারত–যুক্তরাষ্ট্র মধ্যবর্তী বাণিজ্য আলোচনাসমূহ এখনও চলমান রয়েছে—কেউ স্পষ্টভাবে “আলোচনা শেষ” করেনি। তবে আলোচনায় প্রথম সারিতে ভারতের কৃষক ও ক্ষুদ্র শিল্পীদের স্বার্থকে রক্ষা করার বিষয়টিকে ভারতের পক্ষ “লাল রেখা” হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
কৃষক ও ক্ষুদ্র উৎপাদকের অবস্থান
জয়শঙ্কর স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন: “আমরা আমাদের কৃষক ও ক্ষুদ্র উৎপাদকদের স্বার্থ রক্ষায় অটল। এখানে কোনো আপস সম্ভব নয়।”
. রাশিয়ার তেল আমদানি
ট্যারিফ ও চাপ
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ভিত্তিতে ২৫% থেকে ৫০% পর্যন্ত ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
সমালোচনার মোকাবেলা
জয়শঙ্কর বলেছেন, “যদি কারো সমস্যা আমাদের তেল বা রিফাইন্ড পণ্য কিনতে সমস্যা হয়—তাহলে আপনি কিনবেন না। কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকা কিনছে।” — এই অবস্থান কূটনীতিকভাবে নতুন নয়, বরং বাণিজ্যিক আচরণের অংশ।
অসঙ্গতির উল্লেখ
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “রাশিয়ান তেল-ক্রয়ে আমাদের সমালোচনা হচ্ছে—তবে চীন, ইউরোপের বিরুদ্ধে কেন কেউ তেমন কঠোর তখন নয়? ইউরোপ–রাশিয়া বাণিজ্য তো অনেক বেশি।”
নীতিগত অবস্থান
জয়শঙ্কর জোর দিয়েছেন, “এটাই কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন—দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া।”
পাকিস্তান–ভারত মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘মধ্যস্থতা’ দাবি
ইতিহাসভিত্তিক প্রতিক্রিয়া
জয়শঙ্কর উল্লেখ করেছেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরের জাতীয় ঐক্য অনুযায়ী, আমরা কোনো মধ্যস্থতা গ্রহণ করি না।”
মধ্যস্থতা নয়—স্রেফ যোগাযোগ
যখন মে মাসে ভারত সন্ত্রাসবাদের প্রতিশোধে ‘অপারেশন সিনদূর’ চালায়, তখন যুক্তরাষ্ট্র যোগাযোগ করেছিল, কিন্তু সেটা মধ্যস্থতা নয়। “মধ্যস্থতার দাবি করা বা বলা যে কোনো সমঝোতা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেই হয়নি—এটা আলাদা বিষয়।”
অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়—চীন সম্পর্ক ও সীমান্ত পরিস্থিতি
চীন সম্পর্কের ‘ঠাণ্ডা’ কারণ
সম্পর্ক উন্নয়নের পিছনে শুধুমাত্র ভারত–যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বকে দায়ী করা যুক্তিযুক্ত নয়। ভারতের ও চীনের সীমানা সমস্যার কারণে ২০২০ থেকে ‘লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল’ (LAC)-এ উত্তেজনা ছিল, যা নিয়ন্ত্রণে আসার পর সম্পর্ক স্বাভাবিক হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ
“সীমান্ত যদি স্থিতিশীল, পূর্বানুমানযোগ্য ও ঘটনারমুক্ত থাকে, তাহলে অন্য ক্ষেত্রেও সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া স্বাভাবিক।”
ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর তিনটি ‘কেন্দ্রীয়’ ইস্যুকে চিহ্নিত করেছেন—বাণিজ্য আলোচনায় কৃষক ও ক্ষুদ্র উৎপাদকের স্বার্থ, রাশিয়া থেকে শক্তি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরপেক্ষতা, এবং পাকিস্তান–ভারত সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা দাবি। এগুলো ভারত–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বর্তমান বাধা।
ভারতের অবস্থান স্পষ্ট ও অটল: কৌশলগত স্বায়ত্তশাসন বজায় রাখা, কোনো আপস নয়, এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করা প্রধান প্রাধান্য।
সীমান্ত স্থিতিশীলতা অনুযায়ী চীন–ভারত সম্পর্কেও ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে।
জয়শঙ্করের তিন সতর্কবার্তা: বাণিজ্য, রাশিয়ার তেল ও মার্কিন মধ্যস্থতা
-
সারাক্ষণ রিপোর্ট - ১২:৩৯:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
- 83
জনপ্রিয় সংবাদ




















