কেহ কেহ বলিয়া থাকেন যে, তাঁহার প্রকৃত নাম বাল্য আবু মলকান। তিনি পারম্ভের প্রাচীন রাজা আফ্রিদুনের সময় আবির্ভূত হন। সাধারণতঃ থেজেরকে ইলায়াস বলিয়া নিদ্দেশ করা হয়।। খেজের যেরূপে জীবন-নির্ঝর পান করিয়াছিলেন বলিয়া কথিত, ইলায়াসও সেইরূপ ঈশ্বরের আদেশে চেরিখ নামক নদী পান করিয়াছিলেন বলিয়া বাইবেলে লিখিত আছে। ইলায়াস বাতাবর্তে স্বর্গে নীত হন। স্বর্গে নীত হইবার পূর্ব্বে তিনি স্বীয় পরিচ্ছদের দ্বারা জর্ডন নদীতে আঘাত করিলে, নদীর জল বিভক্ত হইয়া যায় এবং তিনি ও তাঁহার শিষ্য ইলাইসা নদীগর্ভে প্রবেশ করেন।
এই সময়ে অগ্নিময় রথ উপস্থিত হওয়ায় ইলায়াস, ইলাইসা হইতে পৃথক্ হইয়া পড়েন, পরে বাতাবর্তে স্বর্গে নীত হন। গ.. সম্ভবতঃ জর্ডনগর্ভে প্রবেশকালে অগ্নিময় রথের আগমন স্মরণ করিয়া এইরূপ অলোকোৎসব হইয়া থাকিবে। গ্রীক ও লাটিন চার্চে ২০এ জুলাই ইলায়াসের স্বর্গারোহণের দিন বলিয়া উৎসব হয়।। কিন্তু ব্যারা পর্ব্ব ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে হইয়া থাকে।
যতদিন হইতে মুর্শিদাবাদের প্রতিষ্ঠা, ততদিন হইতে এই আলোকৎসব চলিয়া আসিতেছে। বাবু ভোলানাথচন্দ্র ভ্রমক্রমে লিখিয়াছেন যে সিরাজ উদ্দৌলা ইহার প্রবর্তনা করেন। কিন্তু প্রচলিত ইতিহাসে নবাব মুর্শিদকুলী খাঁর সময় হইতে ইহার অনুষ্ঠানের উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। যে সময়ে ঢাকায় রাজধানী ছিল, সে সময়েও তথার ব্যারা পর্ব্ব সম্পন্ন হইত। নবাব মকরম খাঁ ঢাকায় ইহার প্রথম প্রবর্তনা করেন বলিয়া কথিত আছে।। পূর্ব্বে ইহা মহাসমারোহে সম্পন্ন হইত, এক্ষণে ক্রমেই মন্দীভূত হইয়া আসিতেছে। বাস্তবিক আলোকোৎসৰ এক্ষণে মুর্শিদাবাদের পক্ষে উপযোগী নহে।
চিরান্ধকারে অবস্থান করিবার জন্য যাহার নিয়তি, আলোকোৎসব তাহার পক্ষে কখনও শোভা পায় না। যাহার পূর্ব্ব-গৌরব না জানি বিস্মৃতির কর্ত গভীর গর্ভে বিলীন হইয়া রহিয়াছে, তাহার আবার উৎসব কি? বিশেষতঃ আলোকোৎসব। নিবিড় অন্ধকাররাশির বিভীষিকাময়ী ক্রীড়াই তাহার একমাত্র উপযোগী।
শ্রী নিখিলনাথ রায় 






















