পাবলিক স্পেস, পর্যটন—আর খরচের হিসাব
জাপান টাইমস জানায়, ওসাকায় এক্সপোর পর এখন আলোচনায় এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব। দর্শনার্থীর ভিড় সামলাতে তৈরি বা সংস্কার করা পার্ক–উদ্যানগুলো ১.৮ কোটির বেশি জনসংখ্যার এই মহানগরে সাপ্তাহিক বিশ্রামের জায়গা হয়ে উঠতে পারে। আতিথেয়তা ও খুচরা ব্যবসায় যে উল্লম্ফন হয়েছে, তা কি প্যাভিলিয়ন বন্ধের পর পুনরাবৃত্ত পর্যটকে রূপ নেবে—এটাই প্রশ্ন। শহর কর্তৃপক্ষ উন্নত ট্রানজিট সংযোগ ও ডিজিটাল টিকিটিংকে স্থায়ী সাফল্য বলছে। সমালোচকেরা বলছেন, খরচ–বাড়তি ও ‘অপর্চুনিটি কস্ট’—যে অর্থ আবাসন বা জলবায়ু–সহনশীলতায় যেত—সেগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে।
টোকিও অলিম্পিকসহ সাম্প্রতিক মেগা–ইভেন্টগুলোতে দেখা গেছে—যেখানে ভেন্যু নমনীয়, সেখানেই সম্প্রদায়ের প্রকৃত লাভ; নইলে রক্ষণাবেক্ষণের বোঝা পড়ে। ওসাকা বলছে, অস্থায়ী কাঠামো পুনর্ব্যবহার হবে; সাংস্কৃতিক আয়োজন ঘুরে যাবে জাদুঘর–জলতটে। আঞ্চলিক শিল্পশক্তি মাথায় রেখে ডিজাইন, রোবোটিক্স ও গ্রিন–টেকের ঘুরন্ত প্রদর্শনী চালুর ভাবনাও রয়েছে।
টেকসই মূল্যায়নের মাপকাঠি
উত্তরাধিকার হিসাব কেবল পর্যটন–আয়ে নয়; বাসিন্দাদের জীবনমান—সবুজ জায়গা, যাতায়াত সময়, ছোট ব্যবসার প্রাণ—এসবই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পদচারী পথ–সাইকেল লেন কি ট্রাফিক চাপ পেরিয়ে টিকে থাকবে, তা নজরে রাখবেন নগরবিদেরা। পরিবেশ–গোষ্ঠী চাইবে বর্জ্য, জ্বালানি ব্যবহার ও জীববৈচিত্র্যের হিসাব–নিকাশ। ভিড়–ব্যবস্থাপনা, বহুভাষা সেবা ও ‘ইউনিভার্সাল ডিজাইন’-এর পাঠ যদি দৈনন্দিন শাসনে ঢুকে যায়, তবে ‘সফট লেগেসি’ হার্ডওয়্যারের চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
আঞ্চলিক ভারসাম্যও বিবেচ্য। টোকিও–কেন্দ্রিকতার বাইরে বড় বিনিয়োগ ধরে রাখতে কানসাইয়ের যুক্তি—অর্থনীতির বিকেন্দ্রীকরণ। সাময়িক আলোড়নকে স্থায়ী ইকোসিস্টেম—স্টার্টআপ, কনফারেন্স, সৃজনশীল শিল্প—তৈরিতে রূপান্তর করতে সরকার–বিশ্ববিদ্যালয়–ব্যবসার সমন্বয়ই পরীক্ষা। বাজেট চাপ ও জনসংখ্যা–বার্ধক্যের যুগে মন্ত্র একটাই: কম খরচে বেশি ফল। ওসাকার প্রস্তাব—পার্ক খোলা রাখো, ট্রেন ঘন রাখো, প্রোগ্রামিং টাটকা রাখো—আর শহরের দৈনন্দিন জীবনকেই আকর্ষণে পরিণত করো।