১০:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

নারীদের অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চায় ব্লাস্ট

  • Sarakhon Report
  • ১২:০০:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • 19

সারাক্ষণ রিপোর্ট 

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর এক প্রসূতি নারীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্লাস্ট উক্ত ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নীতিমালা সম্বলিত রায়ের বাস্তবায়ন ও যথাযথ তদারকি দাবি করছে।

ঘটনাপ্রবাহ

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (শনিবার) রাত ৯টার দিকে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নোয়াপাড়া ফাতেমা বেসরকারি হাসপাতালে দুই জন প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর উচ্চমাত্রায় রক্তপাত শুরু হলে তাঁদের তাৎক্ষণিক সংকটাপন্ন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে একজন নারীর মৃত্যু ঘটে এবং অন্যজন বর্তমানে সুস্থ আছেন।

হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় ও প্রেক্ষাপট

২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর হাইকোর্ট সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের দ্বারা অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়। ব্লাস্টের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার (রিট পিটিশন নম্বর ৭১১৭/২০১৯) পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুস্পষ্ট নীতিমালা সম্বলিত রায় প্রদান করে। এ নির্দেশনার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগে ব্লাস্ট ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা দাবি করে আসছে।

আইনজীবীর মন্তব্য

জনস্বার্থ মামলাটি পরিচালনাকারী আইনজীবী রাশনা ইমাম যশোরের বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর এই প্রসূতি নারীর মৃত্যুর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “সুষ্ঠু তদন্তে যদি বেরিয়ে আসে যে চিকিৎসায় অবহেলা ছিল বা সিজারিয়ান সেকশন আসলে প্রয়োজনীয় ছিল না, তবুও করা হয়েছে—তাহলে দায়ী চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।”

সংবিধানগত দিক

অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন পরিচালনার মাধ্যমে প্রসূতি নারীর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা সংবিধানের

  • ১৫ (ক) [মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা],
  • ১৮(১) [জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা],
  • ২৭ [আইনের দৃষ্টিতে সমতা],
  • ২৮(১) [ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য],
  • ৩১ [আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার], এবং
  • ৩২ [জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার]
    অনুচ্ছেদসমূহের পরিপন্থী। একইসাথে এটি হাইকোর্টের নির্দেশিত নীতিমালারও সুস্পষ্ট অবমাননা।

ব্লাস্টের জোরালো দাবি

  • যশোরের ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ।
  • সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
  • অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে হাইকোর্টের রায়ে উল্লিখিত সুস্পষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়ন ও কার্যকর তদারকি করা।

ব্লাস্ট বিশেষভাবে অনুরোধ করছে যাতে গণমাধ্যম, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ—সকলেই এ বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে।

নারীদের অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা চায় ব্লাস্ট

১২:০০:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

সারাক্ষণ রিপোর্ট 

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর এক প্রসূতি নারীর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্লাস্ট উক্ত ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নীতিমালা সম্বলিত রায়ের বাস্তবায়ন ও যথাযথ তদারকি দাবি করছে।

ঘটনাপ্রবাহ

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ (শনিবার) রাত ৯টার দিকে যশোরের অভয়নগর উপজেলার নোয়াপাড়া ফাতেমা বেসরকারি হাসপাতালে দুই জন প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর উচ্চমাত্রায় রক্তপাত শুরু হলে তাঁদের তাৎক্ষণিক সংকটাপন্ন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে একজন নারীর মৃত্যু ঘটে এবং অন্যজন বর্তমানে সুস্থ আছেন।

হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় ও প্রেক্ষাপট

২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর হাইকোর্ট সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের দ্বারা অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়। ব্লাস্টের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার (রিট পিটিশন নম্বর ৭১১৭/২০১৯) পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুস্পষ্ট নীতিমালা সম্বলিত রায় প্রদান করে। এ নির্দেশনার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগে ব্লাস্ট ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা দাবি করে আসছে।

আইনজীবীর মন্তব্য

জনস্বার্থ মামলাটি পরিচালনাকারী আইনজীবী রাশনা ইমাম যশোরের বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর এই প্রসূতি নারীর মৃত্যুর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “সুষ্ঠু তদন্তে যদি বেরিয়ে আসে যে চিকিৎসায় অবহেলা ছিল বা সিজারিয়ান সেকশন আসলে প্রয়োজনীয় ছিল না, তবুও করা হয়েছে—তাহলে দায়ী চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।”

সংবিধানগত দিক

অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন পরিচালনার মাধ্যমে প্রসূতি নারীর জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলা সংবিধানের

  • ১৫ (ক) [মৌলিক প্রয়োজনের ব্যবস্থা],
  • ১৮(১) [জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতা],
  • ২৭ [আইনের দৃষ্টিতে সমতা],
  • ২৮(১) [ধর্ম, প্রভৃতি কারণে বৈষম্য],
  • ৩১ [আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার], এবং
  • ৩২ [জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার]
    অনুচ্ছেদসমূহের পরিপন্থী। একইসাথে এটি হাইকোর্টের নির্দেশিত নীতিমালারও সুস্পষ্ট অবমাননা।

ব্লাস্টের জোরালো দাবি

  • যশোরের ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ।
  • সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
  • অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধে হাইকোর্টের রায়ে উল্লিখিত সুস্পষ্ট নীতিমালা বাস্তবায়ন ও কার্যকর তদারকি করা।

ব্লাস্ট বিশেষভাবে অনুরোধ করছে যাতে গণমাধ্যম, প্রশাসন ও বিচার বিভাগ—সকলেই এ বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে।