বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন

আমাদের ঘর আগুনে পুড়ছে -গ্রেটা থানবার্গ

  • Update Time : সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০২৪, ৫.০৬ পিএম

আমাদের ঘর আগুনে পুড়ছে

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম, ডাভোস, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৯।

আমাদের বাড়িঘর পুড়ছে। আমি এখানে বলতে চাই যে, আমাদের বাড়িঘর পুড়ছে। আইপসিসি এর মতে , আমরা ১২ বছরেরও কম সময়ের দূরে আছি যখন আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারবো। এই সময়ের মধ্যে আমাদের সমাজের সর্বত্র নজীরবিহীন পরিবর্তন ঘটে যাবে এমনকি কার্বনডাই অক্সাইডের ৫০% নির্গমণ সহ। এবং  দয়া করে মনে রাখবেন যে, এই সংখ্যাটা এই সমতার সংখ্যাটা যোগ করবেননা যেটা বিশ্বব্যাপি প্যারিস চুক্তিকে কার্যকর করতে আমাদের অবশ্যই দরকারী।

ডাভোসের মতো মানুষ বলতে চায় সাফল্যের গল্প। কিন্তু সেখানে অচিন্তনীয়ভাবে তাদের অর্থনৈতিক সাফল্য এসেছে।  কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এসেছে শুন্য। আমাদের স্বীকার করতে হবে আমরা ফেল করেছি। সকল রাজনৈতিক আন্দোলনও সফলতা লাভ করেছে। মিডিয়াগুরো প্রচারণায় ফেল করেছে। কিন্তু মানুষ এখনো ফেল করেনি। হ্যাঁ আমরা ফেল করছি কিন্তু কিন্তু এখনো আমাদের সময় আছ ঘুরে দাঁড়ানোর। এবং সেই ক্ষমতা আমাদের হাতে আছে।

কিন্তু যদি আমরা আমাদের ফেল করার  বর্তমান কারনগুলো চিহ্নিত করতে না পারি তাহলে আমরা একটি জায়গায় গিয়ে দাঁড়াতে পারবোনা।আমরা ব্যাপক সংখ্যক মানুষের অবর্ননীয়  দুখ কষ্ট দেখতে পাচ্ছি। এখন আর এসব ব্যাপারকে ঠান্ডাভাবে বলা বা আমরা কি করতে পারি কি পারিনা সেসব নিয়ে আর আমাদের সময় নেই। এখন সময় হলো স্পষ্টভাবে বলা। জলবায়ু সমস্যাকে মোকাবেলা হলো মানুষের জন্যে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রধান সমাধান খুবই সহজ যে, একটি শিশুও এই সমস্যাটির কথা বোঝে। আমাদের গ্রীনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে হবে।

হয়তো আমরা এটা করবো না হয়তো করবোনা। জীবনে কোনো কিছুই সহজে আসেনা। কিন্তু এটি একটি মিথ্যা। একটি ভীষণ বিপজ্জনক মিথ্যা। হয় আমরা ১.৫ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা ফেরাবো নয়তো করবোনা। হয় আমরা এই অপ্রতিরোধ্য চেইন রিএকশনকে ত্যাগ করবো অথবা না।হয় আমরা সভ্যতার দিকে যাবো , নয়তো না। এটা এখন স্পষ্ট।এখানে কোনো সহজ কথা নেই যেখানে বাঁচার লড়াইয়ের প্রশ্ন আসে। এখন আমাদের সকলেরই পছন্দ রয়েছে। এখন আমরা পরিবর্তনযোগ্য কাজ করতে পারি যা আমাদের জীবনধারাকে ভবিষ্যতের জন্যে নিরাপদ করবে। অথবা আমরা আমাদের জীবনের সাথে মানিয়ে নেব । সেটি আপনার আর আমার ব্যাপার।কেউ বলছেন আমাদের কোনো ধরনের একটিভিজমে যোগদান করা ঠিক নয়। এসবের পরিবর্তে চলুন আমরা সরকার পরিবর্তনে ভোট দেই । কিন্তু আমরা তখন কি করবো যখন যেখানে রাজনৈতিক কোনো সদিচ্ছাই না থাকবে এসব পরিবর্তন নিয়ে। ডাভোসে সবাই শুধু টাকার কথাই বলছে। মনে হয় যেন টাকা আর বড় হওয়াই আমাদের জীবনের মূল উদ্বেগের বিষয়।

যতক্ষন জলবায়ু সমস্যাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়নি ততক্ষণ মানুষ প্রতিদিনকার জীবনধারায় বুঝতেই পারেনি যে এটি সমস্যা।মানূষ জানেওনা যে কার্বন নিয়ে একটা বাজেট আছে এবং সেটি কতটা কম তা নিয়ে কেউ চিন্তাও করেনা। সেটি আজই পরিবর্তন করা উচিৎ।

এই কার্বনের উপরে দেয়া স্বল্প  বাজেটের সাথে আর অন্য কোনো বাজেটের তুলনা হয়না সেজন্যেই মানুষের জানা উচিৎ যে কার্বনের উপরে বাজেট কেন এতা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এখন কার্বন বাজেটকে আমাদের বিশ্বায়নের মাধ্যমে বোঝা উচিৎ। এখন আমরা রয়েছি ইতিহাসের কাঠগড়ায় যেখানে সকলের উচিৎ সভ্যতার উপরে আঘাত হানা সমস্যাকে চিহ্নিত করে তা সম্পর্কে কথা বলা।

এটি এখন পরিষ্কার। এবং এটা কোনো ব্যাপার না যে এটা কতটা কষ্টকর ও অলাভজনক ।

আমাদের সমাজের বর্তমান সময়ের প্রায় সবকিছুতেই পরিবর্তন আনা উচিৎ। যতবড় হবে কার্বন নির্গমণ সমস্যা তত বড় হবে আপনার নৈতিক দায়িত্ব। আপনার প্লাটফর্ম যত বড়, আপনার দায়িত্ব তত বড়।

সিনিয়িররা প্রায়ই বলেন, আমরা যুবকদের দিয়েই ভবিষ্যতের আশা করি। তাদের উপরেই আমাদের আশা ।

কিন্তু আমি আপনাদের আশাকে চাইনা। আমি চাই আপনি বুঝুন প্রতিদিন আমরা কতটা ভয়ের মাঝে বাস করি। এবং তারপর আপনি কিছু করুন। আমি চাই আপনি বিপদের সময় কিছু করুন। আমি চাই আপনি এমন কিছু করুন যেন আপনার মনে হয় আমার ঘর জ্বলছে আর আপনি কিছু করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। কারন এটাই।

(পর্ব ৪)

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

kjhdf73kjhykjhuhf
© All rights reserved © 2024